আইন-আদালত

শবে বরাত নিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন হাইকোর্ট

পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখার বিষয়টি আদালতে আবেদন নিয়ে আসার পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে আবেদনকারীদের বক্তব্য লিখিত আকারে গ্রহণ করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

একই সঙ্গে আবেদনকারীকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন আদালত। তবে চাঁদ দেখা কমিটির আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২১ এপ্রিল সম্ভাব্য শবে বরাত ধরা হয়েছে।

বিশিষ্ট ১০ জনের করা এক রিট আবেদন শুনানির জন্য নিলে সোমবার (১৫ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আবেদনের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশিদ আলম খান।

Advertisement

পরে মোহাম্মদ সাইফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান একটি রিট পিটিশন নিয়ে আসেন কোর্টে। এতে শবে বরাতের তারিখ নিয়ে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। তার পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম স্যার আবেদনটি উপস্থাপন করেন কোর্টে। এবং আদালতে পারমিশন চান।’

আদালত বলেন, এটা ধর্মীয় সেনসেটিভ ইস্যু। এটা আদালতের বিষয়বস্তু না করাই ভালো। আপনাদের (আবেদনকারীদের) বক্তব্য আপাতত ইসলামিক ফাউন্ডেশনে লিখিত আকারে জমা দেন। তারা যদি কনসিরাডেশনে না নেন, তবে আগামী ১৭ তারিখে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা তখন ব্যবস্থা নেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত আমাকে বলেছেন, ডিজিকে (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) জানাতে, যেন আবেদনকারীদের আবেদন গ্রহণ করেন। এবং ১৭ তারিখের মিটিংয়ে আলোচনায় নেন।’

খুরশিদ আলম খান জানান, আদালত অপেক্ষা করতে বলেছেন ১৭ তারিখ পর্যন্ত। এর মধ্যে আবেদনকারীদের লিখিত আবেদন নিতে বলেছেন।

Advertisement

গত ৬ এপ্রিল জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি সভা করে জানিয়েছিল, ওই দিন দেশের আকাশে কোথাও শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে ৮ এপ্রিল থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে এবং ২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে পবিত্র লায়লাতুল বরাত পালিত হবে।

তবে ‘মজলিসু রুইয়াতিল হিলাল’ নামে একটি সংগঠনের দাবি, সেদিন খাগড়াছড়িতে চাঁদ দেখা গেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, ২০ এপ্রিল দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল বরাত পালিত হওয়ার কথা। এ নিয়ে বিতর্ক এড়াতেই জরুরি বৈঠক ডাকে সরকার।

১৩ এপ্রিল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে ১১ সদস্যের সাব-কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি শবে বরাতের আগে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ জানান, বিষয়টা যেহেতু ধর্মীয়, যারা আমাদের দেশে সবচেয়ে জ্ঞানবান আলেম, তাদের ওপর দায়িত্বটা দেয়া হয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।

কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন বিশিষ্ট আলেম রাজধানীর মিরপুরের মারকাজুদ দাওয়ার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা মুফতি আব্দুল মালেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম ও বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমীন, শায়খ যাকারিয়া (রহ.) ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম (মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স) মাদরাসার মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, তেজগাঁও মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক আল আযহারী, লালবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি মো. ফয়জুল্লাহ, লালবাগ মাদরাসার প্রধান মুফতি মাওলানা ইয়াহ্ইয়া, মোহাম্মদপুর জামেয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি মো. মাহ্ফুজুল হক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।

এফএইচ/এনডিএস/জেআইএম