ইতালিতে বাংলাদেশি দুই শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ব্যাচেলর অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনেস্টেশনে এ বছর কৃতিত্বের সঙ্গে ইতালি প্রবাসী তানিয়া পাস করেন। একই সঙ্গে আব্দুর রহমান গালিব ডিপার্টমেন্ট অব ম্যানেজম্যান্ট অ্যান্ড লতে গ্রাজুয়েশন করলে সম্প্রতি রোমের নাম করা তরভেরগাতা ইউনিভার্সিটি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে সাটিফিকেট তুলে দেয়া হয়।
Advertisement
মা-বাবার সঙ্গে ২০০০ সালে ইতালিতে পাড়ি জমান তানিয়া। এরপর ২০০৫ সালে পড়ালেখা শুরু করেন ইতালিয়ান স্কুলে। বাংলাদেশের এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পড়াশুনা ইতালিয়ান ভাষায় স্কুল এবং কলেজ শেষ করে। পরে তানিয়া থেমে থাকেননি সাহস করে ভর্তি হন রোমের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় তরভেরগাতা। তবে এবার ইতালিয়ান ভাষায় নয়; ইংরেজি ভার্সনে পড়াশোনা শুরু করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী নেই বললেই চলে। সাহসের পরিচয় দিয়ে সাফল্যের সঙ্গে ব্যাচেলর অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনেস্টেশনে এ বছর কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
ফলাফল সন্তুষ্ট হয়ে তানিয়া বলেন, ‘ইতালিতে বেড়ে ওঠা অনেকেরই ধারণা ইতালিতে ভালো কোনো পড়ালেখা হয় না। এ জন্য কেউ লন্ডন বা অন্য দেশে পড়তে যান। তবে আমি প্রমাণ করেছি ইতালিতেও ভালোমানের শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। সব কিছুই নির্ভর করে নিজের ইচ্ছার ওপর।’
তানিয়া বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে ব্যবসা করতে চান। ভবিষ্যতে নারী উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী তিনি। তানিয়া জানান, পড়ালেখার মধ্যেই বিয়ে হয় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে। ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের মা তিনি।
Advertisement
একদিকে সংসার অন্যদিকে সব বাধা পেরিয়ে পিএইচডি করতে চান তানিয়া। ইতালিতে বেড়ে ওঠা তানিয়ার এ সাফল্যে খুশি তার পরিবারসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তার গ্রামের বাড়ি বাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তানিয়ার সঙ্গে একই দিনে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে আসা আব্দুর রহমান গালিবও। ডিপার্টমেন্ট অব ম্যানেজম্যান্ট অ্যান্ড লতে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। কানাডা থেকে পিএইচডি করে দেশে গিয়ে শিক্ষকতা করতে চান গালিব। গাজীপুর জেলার কাশিমপুরে গালিবের গ্রামের বাড়ি।
গালিব দেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে ইতালিতে পাড়ি জমান চার বছর আগে। তাদের ভালো ফলাফলের পাশাপাশি আচার-আচারণের প্রশংসা করেছেন শিক্ষকরা। নিয়মিত ক্লাস করা, ভদ্রতায় তরভেরগাতা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত অন্য দেশের ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের রয়েছে আলাদা সুনাম। আগামী দিনে বাংলাদেশি দুই কৃতি শিক্ষার্থী, সুনাম বয়ে আনবে দেশের জন্য এমন প্রত্যাশা করছেন রোমের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এনডিএস/জেআইএম
Advertisement