ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে দুই দেশই বেশ আগ্রহী।
Advertisement
শনিবার বাংলাদেশে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা উঠে আসে। সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গভবনে লোটে শেরিংকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি। পরে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠক করেন তারা।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গভবনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটান।
প্রধান তথ্য কর্মকর্তা জানান, সাক্ষাতের সময় বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে দুই দেশের আগ্রহের কথা উঠে আসে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের সম্পর্ক ক্রমশ বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সফরের ফলে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
Advertisement
চারদিনের সফরে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশে এসেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর, এটিই বিদেশি কোনো সরকার প্রধানের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেন লোটে শেরিং। স্বাস্থ্য, কৃষি, নৌপরিবহন, পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং জনপ্রশাসন খাতে প্রশিক্ষণের বিষয়ে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ভুটানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়ন হলে বাণিজ্য-বিনিয়োগ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ।
সাক্ষাৎকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে আবার আসতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তা মাইলফলক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিকসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল ইসলামসহ বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অষ্টাদশ ব্যাচের ছাত্র লোটে শেরিং এমবিবিএস পাস করার পর বাংলাদেশেই সার্জারিতে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। দেশে ফিরে যোগ দেন চিকিৎসকের পেশায়।
সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৩ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই তার দল ডিএনটি চমক সৃষ্টি করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডিএনটি জয়ী হলে ডা. শেরিং হন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তার। ভোরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সুরের ধারার আয়োজনে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকবেন। পরে যাবেন নিজের পুরনো শিক্ষাঙ্গন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে।
বিমসটেকের সদস্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকায় এ জোটের সচিবালয়েও যাবেন লোটে শেরিং। তিনদিনের সফর শেষ করে ১৫ এপ্রিল তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
এফএইচএস/এমএসএইচ/এমএস