ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকারীদের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী যাতে মামলায় না লড়েন সেই আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে কেউ যাতে হত্যাকারীদের পক্ষ না নেয় সেই আহ্বান জানান তারা।
Advertisement
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানানো হয়। ফেনী সমিতি ঢাকা, সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, বাংলাদেশ কিষাণী সভা, বাংলাদেশ ভাসমান নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতি, বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতির ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, সারাদেশের মানুষ নুসরাতের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ নুসরাতের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় বিচার করে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও নুসরাতের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন >> নুসরাতের শোকে হাসপাতালে ছোট ভাই
Advertisement
বক্তারা বলেন, নুসরাতকে যারা খুন করেছে তারা জঘন্য অপরাধ করেছে। সিরাজ উদ দৌলা শুধু নুসরাতের খুনি নয়, সে পুরো পুরুষ জাতির কলঙ্ক। যারা হিজাব পরে নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে তারা নারী জাতির কলঙ্ক। ওই নারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে ফেনীর সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ফেনী সমিতি ঢাকা আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমি আজ অভিভূত। আজ থেকে ২৪ বছর আগে দাঁড়িয়েছিলাম। দিনাজপুরের শান্তি ভাই জীবন দিয়েছিল। অন্য জায়গার ভাইদের আমরা ও রকম দেখিনি। শুধু আজ নুসরাতের জন্য সারাদেশে মেয়েদের পাশে ছেলেরা দাঁড়াচ্ছে। এটাই হচ্ছে আমাদের সাফল্য।’
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রকৃত যারা দোষী তাদের শাস্তি পেতেই হবে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সে যে দলেরই হোক না কেন তারা সন্ত্রাসী হতে পারে না, হত্যাকারী হতে পারে না। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তারা কোনো দলের নয়। তাদের পক্ষে কেউ দাঁড়াবেন না। কোনো আইনজীবী তাদের পক্ষে মামলা লড়বেন না। এমপিওভুক্তি থেকে এদের নাম কেটে দিতে হবে। এদের বিচারের রায় দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো গরিমসি আমরা দেখতে চাই না।
আরও পড়ুন >> নুসরাত হত্যা : পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ গ্রেফতার
Advertisement
জাহানারা বেগম নামের একজন বলেন, ‘আমরা নুসরাতের খুনিরের ফাঁসি চাই। সেই সঙ্গে সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে নুসরাত হত্যার অপরাধে ফাঁসি দিতে হবে, তাকে শুধু বদলি বা বহিষ্কার করলে হবে না।’
অপর এক মানববন্ধন থেকে এক নারী বলেন, হিজাব পরে ইসলামের লেবাস ধরে যে মেয়েরা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে তারা নারী জাতির কলঙ্ক। ওরা বেশ্যদের থেকেও খারাপ। এসব খারাপ মেয়ে স্বামী ও পরিবারকে কষ্ট দিয়ে সমাজ নষ্ট করে। তাই সিরাজ উদ দৌলার পাশাপাশি ওই মেয়েদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।
এমএএস/বিএ/এমএস