সাহিত্য

বৈশাখী স্মৃতি

হৈ চৈ হৈ হুল্লোড় সারাদিন,খেলাধুলা ঘুরাফেরা বিনোদন প্রচুর।আমাদের শৈশব কৈশোর ছিলকত আনন্দের; উল্লাসে ভরপুর।

Advertisement

কালের ডানায় ভর করেযদি ফিরে যাই, অতীত সাগর তীরেদুরন্ত শৈশব কৈশোরে;বৈশাখী সোনালি স্মৃতিকণাগুলোমনে পড়ে বারে বারে।

একটা অখণ্ড সবুজ-তামাটেবিশাল চাদরে ঢাকা মাঠ;নদীর পাড়ে গোপাটের শেষ প্রান্তে,বিশাল বট গাছ,মম উন্নত শিরের মতবীর বেশে দাঁড়িয়েযেন এক বিশাল প্রাকৃতিক ছাতা!নীলাকাশের নিচে মাটিতে পোতাপরম মমতায় ছায়া বিতরণেমানবের তরে বৃক্ষের কত আকুলতা!

তারই চারিপাশে সাজ সাজ রব,হাজার মানুষের কোলাহলচুড়ি-ফিতা মণ্ডা মিঠাই বাহারি পণ্য কেনার ঢল;হরেক রকম খেলনা,পসরা শত শত পাতার বাঁশির পু-পু শব্দবাঁজতো অবিরত!ঢাক, ঢোলের ঢুং ঢাংঢুলির তালমাতাল উদ্দাম নৃত্যসকাল থেকে চলে সারা বেলা;এই তো বাঙালির বর্ষসেরা উৎসবমনের মেলা মিলন মেলাসবার প্রিয় বৈশাখী মেলা!

Advertisement

আমের গাছে ঢিল ছোড়া,দস্যি ছেলের দলের হয়ে জামেরমগডালে উঠে জামের রসে মুখ রাঙানো!কাঁঠাল-কলা চুরির আসামি হয়েদাদিমার আদালতে ভালো মানুষের ভং ধরা!উজির ছোট চাচার রাজদণ্ডকান ধরে উঠবস শতবার,মেকি কান্নায় তাঁর মন গলানোকত কঠিন যেন ঢেঁকি গেলার! আর কোনদিন হবে না আবার!

মুক্তি পেয়েই কে শোনে কথা কার!হৈ হৈ রৈ রৈ করে সারাটা দিন পার!সবাই টো টো কোম্পানির ম্যানেজার!আমরা নিজেই রাজা ধারি না কো কারো ধার!মনে বড় সাধ যদি ফিরে পেতামসেই হারানো দিনগুলো আবার!

বাবার বকুনি মায়ের আদুরে শাসনবোনের ভালোবাসা যায় না ভোলা,কত প্রিয় ছিল আমাদের সেই সোনালি ছেলেবেলা!আজও সামনে দেখি মহানগরের ইট-কাঠ দালানের মেলামানসজগতে ভাসেশৈশবের স্মৃতি সারাবেলাচৈত্রের অলস দুপুরবেলা! কী মধুর ছিল আমাদের ছেলেবেলা!

দুপুরের পরে পড়ন্ত বিকেলতাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে বার বার;খোশমেজাজে ঘুর ঘুর করা তাঁকে দেখানো আমারবৈশাখী পোশাকের বাহার।লাল শার্ট নীল প্যান্টকপালে ট্যাগসহ সানগ্লাস,মনে মনে ভাবতাম আমিই এ প্লাস!অন্যসব থার্ড ক্লাস!

Advertisement

ছেলেবেলায় যা ছিল বীরেশ,সেইদিনের সেই সল্টুর বেশমনে পড়ে আজওমোছা যায় না কো হাসির রেশ!

সাঝের পরে সব চুপচাপ,আফসোস আহা, বৈশাখী মেলা শেষ!সারা বছর ধরে প্রতীক্ষার প্রহর গুনিমনে নিয়ে বৈশাখের প্রথম দিনের রেশ!

শাওনাজ, উত্তরখান, ঢাকা।

এসইউ/এমকেএইচ