তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা দ্বিতীয় রিট আবেদনের আদেশের জন্য বুধবার দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ঠিক করেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী ও মুহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে রোববার ও সোমবারও দুই দিন রিটের পক্ষে–বিপক্ষে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা এক মামলায় গ্রেফতারের পর জামিনে থাকা জাকির হোসেনের পক্ষে গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী শিশির মনির।রিটে আইন সচিব ও তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ৫৭ ধারাটি সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় রিটটি দায়ের করা হয়েছে।তিনি জানান, ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে; আইনের চোখে সকলে সমান এবং ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। ৫৭ ধারাটি এর সাথে সাংঘর্ষিক। তাই রিটটি করা হয়েছে।সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তি আইনে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে গ্রেফতারের পর ৫৭ ধারাটি আলোচনায় আসে।তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েব সাইটে বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ৷
Advertisement
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বৎসর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন৷এদিকে ৫৭ ধারা বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১১ শিক্ষক-লেখকের দায়ের করা অপর রিটের ওপর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে কেন অসংবিধান ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। আগমী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব এবং তথ্য ও য্গোযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিবকে উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।এছাড়া ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিল চেয়ে ইউনুছ আলী আকন্দের দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ।
এফএইচ/এসএইচএস
Advertisement