ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত রাফির অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকে দেশের খণ্ডচিত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
Advertisement
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জিয়া আদর্শ একাডেমি’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ সব কারাবন্দির মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
আলাল বলেন, ‘আজ নুসরাতের যে অবস্থা হয়েছে এটা তো বাংলাদেশের একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। গোটা বাংলাদেশই তো নুসরাতে পরিণত হয়েছে। সারা বাংলাদেশ আজ ধর্ষিত, অগ্নিদগ্ধ। আর ফেনীর সোনাগাজীতে কি হয়েছে তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘নুসরাত আজ চলে গেছে। তাকে যে ওসি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সেই ওসির কত বড় দুঃসাহস সেই জিজ্ঞাসাবাদ ভিডিও করলো। সেই ভিডিওটি আবার প্রকাশ করলো কীভাবে? তার বিরুদ্ধে প্রথম সাইবার সিকিউরিটি আইনে একটি মামলা করে তাকে রিমান্ডে আনা উচিত। কিন্তু সেটা এ আওয়ামী শাসকরা করবে না। কারণ এরা তো সরকার না এরা হচ্ছে শাসক।’
খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তার জন্য সরকারের সমালোচনা করে আলাল বলেন, ‘প্যারোলটা প্রসব করেছে আওয়ামী লীগ এবং এটা লালন পালন করে শিশুর মতো বড় করেছে আওয়ামী লীগ। একমন্ত্রী বলেন খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে সুপারিশ করলে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হবে। আরেক মন্ত্রী বলেন প্যারোলের কোনো প্রশ্নই আসে না। আইনগতভাবে মুক্তি নিতে হবে। নিজেরা পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে একটি নাটক তৈরি করেছেন। এ নাটকের মধ্য দিয়ে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেই নাটক নিয়ে আমরা যেন গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা না করি।’
আলাল বলেন, ‘ শেখ মুজিবের প্যারোল আর বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল এক না। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আমলে প্যারোলে মুক্তি নিয়েছিলেন। তার আগে রাজপথে অনেক রক্ত ঝরেছিল। তখন শেখ মুজিবের বয়স ৪৫ থেকে ৪৬ বছর। আর এখন বেগম খালেদা জিয়ার বষয় ৭৫ এসব বিবেচনা করতে হবে। প্যারোলে মুক্তি নিয়েছিল শেখ হাসিনা, ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের আমলে। এরশাদের আমল থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এরশাদ বেগম খালেদা জিয়াকে ভাইস চেয়ারম্যান করতে চেয়েছিলেন। তাকে অনেক ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন। অনেক সুযোগ-সুবিধা দিতে চেয়েছিলেন। তারপরও বেগম খালেদা জিয়াকে সাধারণ জনগণের মাঝ থেকে সরাতে পারেননি। তবে আজ কেন এ অপপ্রচারের উত্তর দিতে এতো ভয়।’
তিনি বলেন, ‘এ আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসন, বিজিবি, পুলিশ-র্যাবের ভিক্ষা দেয়া ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। তাদের ভিক্ষা দেয়া ভোটে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাই এ সরকারের কাছে আমরা এর চেয়ে বেশি কী আশা করতে পারি।’
Advertisement
আলাল বলেন, ‘সরকার যখন শাসক হয়ে যায় তখনই দুঃশাসন মাথাচাড়া দেয়। বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো সরকার নেই শাসক আছে। আর সেই শাসকের ক্যাপ্টেন হচ্ছেন শেখ হাসিনা।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদম্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, কৃষক দল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎসজীবী দল নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
কেএইচ/এনডিএস/এমকেএইচ