ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষকের এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্থগিত করেছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর। বৃহস্পতিবার অধিদফতর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
Advertisement
এমপিও স্থগিত হওয়া শিক্ষকরা হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন।
আরও পড়ুন- বাবার কান্নায় ভিজে গেল নুসরাতের কবরের মাটি
আদেশে বলা হয়, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির মামলা (নম্বর-২৪, তারিখ- ২৭/০৩/২০১৯) ও হত্যা মামলায় (নম্বর-১০, তারিখ- ০৮/০৪/২০১৯) মাদরাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ-উদ দৌলা এবং একই মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ায় তাদের এমপিও স্থগিত করা হলো।
Advertisement
আরও পড়ুন: বাবা কাঁদছেন, জ্ঞান হারাচ্ছেন ভাই
মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শফিউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও হত্যা মামলা দায়ের এবং তারা গ্রেফতার হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাদের এমপিও স্থগিত করা হয়েছে। ওই দুই শিক্ষকের সব ডাটা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ইএমআইএস (ইলেকট্রনিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) সেলে থাকায় মাউশি মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
Advertisement
এ ঘটনার পর ৮ এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সোনাগাজী থানায় আরেকটি মামলা (নম্বর ১০) করেন।
আসামিদের মধ্যে পলাতক— সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলম, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অন্যতম সহযোগী নূরউদ্দিন, ওই মাদরাসার ছাত্র সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হাসান ও আব্দুল কাদের।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান নুসরাত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এমএইচএম/এনডিএস/এমকেএইচ