মালিক-শ্রমিকদের ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর বিভিন্ন ধারা বাতিল-সংশোধনের দাবি নিয়ে সরকার শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
Advertisement
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী। এর আগে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ দিতে গঠিত কমিটির বৈঠক হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কমিটির প্রধান।
গত বছরের ৮ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর গেজেট জারি করা হয়। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আইনটি বাস্তবায়নে যায়নি সরকার।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন ধারার বিরোধিতা করে আসছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তারা আইনের বিভিন্ন ধারা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনেও নামেন। মালিক-শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে সড়ক পরিবহন আইনের সব ধারা জামিনযোগ্য করা, সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকার বিধান বাতিল করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা ইত্যাদি।
Advertisement
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে আইনমন্ত্রী, আমি ও রেলমন্ত্রীকে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছিল। আজকে আমরা বসেছিলাম। আইনটির যেসব বিষয়ে তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) আপত্তির কথা বলেছেন সবগুলো ধারা আমরা দেখেছি। আমাদের মনে হলো আমরা এটাকে আরেকটু ভালো করে দেখে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে শিগগিরই বসে আমাদের মতামত প্রকাশ করব।’
তিনি বলেন, ‘(দাবিগুলো) আমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি, সবগুলো পয়েন্টই আলাপ করেছি। আলোচনার জন্য আমরা আরেকটা দিন ধার্য করেছি, সেদিন স্টেকহোল্ডাররা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) থাকবেন। তাদের কথা শুনে আমাদের মতামতটাও বলব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে যদি কোনো কিছু যোগ-বিয়োগ করতে হয় সেটা আমরা দেখছি। সেজন্য আইনমন্ত্রী মহোদয় আছেন তারা মতামত দেবেন। আমরা তাদের দাবিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি, দাবিগুলোর যৌক্তিকতা আছে কিনা সেগুলো দেখছি।’
কবে আবার বৈঠকে বসছেন? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শিগগিরই আবার বসব।
Advertisement
আইন হয়ে যাওয়ার পর এভাবে বসার কোনো সুযোগ আছে কিনা? এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন আইনের গতিতে চলছে। এটা গেজেট হয়ে যেখানে চলে যাওয়ার চলে যাচ্ছে। আইন বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। আমরা দেখছি, তারা যে আপত্তি করেছে সেটার কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা।’
কতদিনের মধ্যে আইনটি কার্যকর করতে পারবেন বলে মনে করছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
সর্বোচ্চ শাস্তির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসতে পারে কিনা- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো এখনও চিন্তা করিনি। আমরা কোনো কিছুই চিন্তা করিনি। আইনের বাস্তবায়ন তার গতিতেই হবে, এখানে আমাদের কোনো কথা নেই, আমরা শুধু দাবির যৌক্তিকতা দেখছি।’
এর আগে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আইনটি খতিয়ে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল এই আইনটা খতিয়ে দেখার জন্য। বৈঠকে আমরা আইনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখেছি। দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলব। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা প্রকাশ করব।’
তিনি বলেন, ‘বিধি প্রণয়নের কাজ অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আমরা যে প্রস্তাবগুলো করতে চাই...তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটা ঐকমত্যে এসে তারপর ঘোষণা দিতে চাই।’
‘আইনটাকে কার্যকর করতে যা যা করণীয় সেটার আলোকেই আজকে বৈঠক করেছি, এটাকে আমরা শিগগিরই কার্যকর করতে চাই’ বলেন আনিসুল হক।
আরএমএম/এসআর/পিআর