>> শিশুদের পকেটে ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রাখতে হবে>> পথিমধ্যে কেউ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবে না>> পহেলা বৈশাখে হারিয়ে গেলে থাকছে শতাধিক মাইক
Advertisement
আসন্ন বৈশাখ বরণে রমনা বটমূল ও সোহরাওয়ার্দী ছাড়াও রাজধানীর প্রত্যেকটি এলাকার অনুষ্ঠানে থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। এবার জরুরি সেবা তথ্য জানাতে স্থাপন করা হয়েছে শতাধিক মাইক। কেউ হারিয়ে গেলে, কিছু চুরি গেলে কিংবা অন্য যে কোনো জরুরি তথ্য কেন্দ্রীয় মাইকিং ব্যবস্থাপনায় জানানো হবে। এ ছাড়া ইভটিজিং প্রতিরোধে থাকবে বিশেষ টহল, থাকবে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
গতবারের ন্যায় এবারও পহেলা বৈশাখের সব অনুষ্ঠানস্থল থাকবে ধূমপানমুক্ত। অনুষ্ঠানস্থলে ধূমপান করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।
জানাচ্ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
Advertisement
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবার বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। নগরবাসীর নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তাই তাই করা হবে। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব। কোনো ধরনের কোনো নাশকতার চেষ্টা হলে সেটা যাতে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারি সে ধরনের প্রস্তুতি আমাদের থাকবে।
‘বৈশাখের সব অনুষ্ঠানস্থল ধূমপানমুক্ত রাখতে নিরাপত্তাকর্মীরা কাজ করবে। এর জন্য অনুষ্ঠানস্থলে ডিএমপির মোবাইল কোর্ট থাকবে। যদি কেউ অনুষ্ঠানস্থলে দূমপান করে তবে সেখানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, সব অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে থাকবে পর্যাপ্তসংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য। রমনা পার্ক এলাকায় কন্ট্রোলরুম থাকবে, সেখান থেকে সার্বক্ষণিক সবকিছু মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। পুরো এলাকায় ওয়াচটাওয়ার থেকে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করা হবে।
‘রবীন্দ্র সরোবর, রমনা পার্ক, হাতিরঝিল এলাকায় জলাশয় রয়েছে। সেসব জলাশয়ে নৌটহল এবং উদ্ধারকারী ডুবুরি দল প্রস্তুত থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে মেডিকেল টিম তাদের অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রস্তুত থাকবে। যে কোনো বিপদ দেখা দিলে, সে অনুযায়ী আমাদের ইভাকুয়েশন প্ল্যান রয়েছে। আশপাশের এলাকার হাসপাতালগুলোকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হবে।’
Advertisement
ইভটিজিং প্রতিরোধের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার কলেন, ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ দল, টহল ডিউটি, ফুট পেট্রোলিংয়ের সমন্বয়ে সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সব দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালি চেকিংয়ের পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে চিরাচরিত রুটেই যাবে। পুরো পথে সিসিটিভি ক্যামেরা ও পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পথিমধ্যে কেউ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবে না। কারণ চতুর্দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মানবশিল্ড গঠন করা হবে।
‘গতবারের ন্যায় এবারও মুখোশ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। প্রতিবারের মতো ভুভুজেলা নিষিদ্ধ থাকবে। যদি কেউ ভুভুজেলা বাজিয়ে নারীদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে তাহলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আমরা মানুষকে নিরাপদে রাখতে রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় কেন্দ্রীয় রাস্তা বন্ধ করে রাখব।’
আছাসুজ্জামান মিয়া বলেন, উৎসবে আসা সাধারণ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিমের পাশাপাশি থাকবে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা। ইভটিজিং প্রতিরোধ করা হকার উচ্ছেদ এবং পকেটমার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ঢাকা মহারগর পুলিশের বিশেষায়িত টিম সোয়াত। আর্চওয়ে থাকবে ছায়ানটে। কেউ কোনো বাণিজ্যিক ব্যানার দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রবেশ করতে পারবেন না। অনুষ্ঠানে আসা শিশুদের পকেটে প্রয়োজনীয় যোগাযোগের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রাখতে হবে। যাতে করে হারিয়ে গেলে দ্রুত নিরাপদে অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বলা হয়েছে রমনা পার্কে তিনটি প্রবেশ এবং দুটি বাইরের গেট থাকবে। প্রবেশ-বের হওয়ার গেট থাকবে তিনটি। বিকেল পাঁচটার পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে। আর উন্মুক্ত স্থানে সন্ধ্যা ৬টার পর সকল ধরনের অনুষ্ঠান কর্মসূচি চলবে না। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে দা, কাচি, ছুরি দাহ্য পদার্থ ব্যাগ, বহন করা যাবে না। তবে নারীরা ছো্ট্ট পার্স ব্যবহার করতে পারবেন।
তার আগে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার এবং ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার মুরাদ হোসেন তাদের করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, মীর রেজাউল আলম, আবদুল বাতেন, উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান, ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার এসএম মুরাদ আলিসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
জেইউ/জেডএ/আরআইপি