লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
Advertisement
এতে বলা হয়, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে।
এদিকে লক্ষ্মীপুরকে বিএনপির ‘ঘাঁটি’ বলা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসন থেকে দুইবার সংসদ নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ায় অনেকেই লক্ষ্মীপুরকে ‘খালেদার ঘর’ বলেও অভিহিত করেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি বিজয়ী হয়ে উপ-নির্বাচনে আসনটি ছেড়ে দেন।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরে দুই বছর ধরে বিএনপি রাজনীতি ঢিমেতালে চলছে। নেতারা প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পাল্টাপাল্টি সভা, সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনেও তারা এক হতে পারেনি।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে সভাপতি ও সাহাব উদ্দিন সাবুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। গত দুই বছর ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং তাদের অনুসারীরা বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আবুল খায়ের ভূঁইয়ার বিভিন্ন কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি অংশ নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদর উপজেলা বিএনপির দুইজন নেতা ও একজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে দল খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ অন্য আন্দোলন-সংগ্রামে নেতাকর্মীরা মাঠে নামেনি। সিনিয়ররা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। যদি নেতাদের ত্যাগ-শ্রম মূল্যায়ন করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হয়, তাহলে পুরোনো ঘাঁটিতে বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
বিলুপ্ত হওয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু বলেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নেতাদের নিয়ে সুন্দর একটি কমিটি উপহার পাওয়ার প্রত্যশা করছি। এর মধ্যে দিয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন, থানা ও জেলা কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে। পাশাপাশি হামলা-মামলার গ্লানি মুচে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে।
বিলুপ্ত হওয়া লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র আমাদের বিপক্ষে কাজ করছে, না হয় এখানে সাংগঠনিক কার্যক্রমে বিএনপির ধারে কাছেও কেউ নেই। নেতাকর্মীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। অতীতে যারা রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে এমন নির্ভেজাল বিএনপির নেতাদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষু ও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা সম্মেলন করতে পারিনি।
Advertisement
কাজল কায়েস/আরএআর/পিআর