আইন-আদালত

শুনানির শীর্ষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারুল ও কায়সারের আপিল

মহান মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম এবং সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আবেদন বুধবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় পর্যায়ক্রমে এক ও দুই নম্বরে রয়েছে।

Advertisement

এদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে পৃথক দুটি আপিল আদেশের জন্য রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বুধবারের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) দেখা যায়, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চের এক নম্বরে আজহারের আপিলটি আদেশের জন্য রয়েছে। ২ নম্বরে রয়েছে জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক নেতা সৈয়দ কায়সারের আপিল।

আজহারুল ইসলাম

Advertisement

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, এক নারীকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) অভিযোগ ছাড়াও তিনি যে আলবদর কমান্ডার ছিলেন তাও প্রমাণিত হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা এ আপিল করেন। আপিলে খালাস চান তিনি। মোট ৯০ পৃষ্ঠার আপিলে খালাসের পক্ষে ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।

সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার

Advertisement

মুক্তিযুদ্ধকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেন হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তাকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে ১৫২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ২ নারীকে ধর্ষণ, ৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন এবং ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির আদেশ পান কায়সার। সাঁওতাল নারী হীরামনি ও অপর নারী মাজেদাকে ধর্ষণের অপরাধ দুটি প্রমাণিত হয়। পরের বছর ১৯ জানুয়ারি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফাঁসির সাজা বাতিল ও বেকসুর খালাসের আরজি জানিয়ে আপিল করেন তিনি।

এফএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম