প্রবাস

ওমানে মাছ ব্যবসায় কোটিপতি সিলেটের সফিউল

পরিবারের সুখের আশায় ১৯৭৪ সালে ওমানে পাড়ি জমান সিলেটের মুহাম্মাদ সফিউল আলম অরফে ধন মিয়া। প্রথমে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে গাড়ির ওয়ার্কশপে কাজ করতেন তিনি। পরে সব বাদ দিয়ে মাছের ব্যবসা শুরু করেন। দেশটির প্রবাসীরা তাকে আবু মরিয়াম নামেই চেনে।

Advertisement

১১ বছরের শ্রমিক জীবন শেষ করে নেমে পড়েন মাছের ব্যবসায়। শুরুতে ছোট্ট পরিসরে হলেও ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার বাড়তে থাকে। রাজধানী মাস্কাট থেকে প্রায় ৭০০ কি.মি. দূরে শুয়ামিয়া নামক শহরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ৭০ জন লোক নিয়মিত কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিকে। বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানি, ওমানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমিক কাজ করে ধন মিয়ার কোম্পানিতে।

আরও পড়ুন > ইউরোপে ব্যর্থ, ওমানে সফল

দেশটিতে তার নিজস্ব ২০টিরও অধিক মাছধরা স্পিডবোট রয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ১০ টন পর্যন্ত মাছ শিকার করেন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাছ রফতানি করে ইতোমধ্যে তিনি শিল্পপতি বনে গেছেন।

Advertisement

প্রতিদিন সকালে মাছ শিকারের উদ্যেশ্যে আরব সাগরের গভীরে চলে যায় জেলেরা। সন্ধ্যা নাগাদ আবার তীরে চলে আসেন মাছ বোঝাই বোট নিয়ে।

এখান থেকে সৌদি, দুবাই, কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাছ রফতানি করেন এই আবু মরিয়াম। তিন ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বেশ সুখে শান্তিতেই আছেন ওমানে। শুয়ামিয়া শহরে তার রয়েছে একাধিক নিজস্ব বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলেও তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।

সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানা, পোস্ট রানাফিং, গ্রাম চন্দন বাগের সন্তান মুহাম্মাদ সফিউল আলম অরফে ধন মিয়া। পিতা আব্দুস সাত্তার, ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনিই ৮ নম্বর বলে জানান তিনি।

এ ছাড়াও তার রয়েছে মেহমান খানা, যেখানে প্রতিদিন ওমানের বিভিন্ন শহর থেকে আগত অতিথিরা খাওয়া দাওয়া করেন এবং রাতে ঘুমান, এভাবে প্রতিদিন তিনি প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন মেহমানের আপ্যায়ন করেন সম্পূর্ণ ফ্রি-তে। তার মেহমানদারীর সুনাম রয়েছে গোটা ওমানজুড়েই।

Advertisement

আরও পড়ুন > ওমানে জুসের ব্যবসা করে সফল বরকত আলী

শুধুমাত্র ওমানিরাই তাকে চেনেন এমনটা নয়, সারা বিশ্বে মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে তার অন্যরকম সুনাম রয়েছে। তার বড় ছেলের বিয়ে দিয়েছেন ইয়ামেন দেশের ধনাঢ্য পরিবারের এক মেয়ের সঙ্গে। বাকি ছেলে-মেয়েরা এখনো ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করছে।

তার এই দীর্ঘদিন মাছের ব্যবসার স্মরণীয় ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে দেড় টন ওজনের মাছ ধরা পড়ে। যে মাছের পেট থেকে আম্বর বিক্রি করে প্রায় তিন কোটি টাকা আয় করেছিলেন তিনি।’

এমআরএম/জেআইএম