জাতীয়

স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন হচ্ছে ২০০ উপজেলায়

স্থানভিত্তিক নির্ভুল পূর্বাভাস পেতে দেশের ২০০ উপজেলায় হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন। একটি প্রকল্পের আওতায় উপজেলা পরিষদের জমিতে এ আবহাওয়া স্টেশনগুলো হবে।

Advertisement

এ জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এসএম গোলাম ফারুক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া এ সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

এ সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৫২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘স্ট্রেনদেনিং মেট্রোলজিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস (কম্পোনেন্ট-এ) আন্ডার বাংলাদেশ ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট সার্ভিসেস রিজিওনাল প্রজেক্ট’ নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এ প্রকল্পের আওতায় ২০০ উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন নির্মাণ ছাড়াও ৬৫টি স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টিমাপক যন্ত্র ও ৩৫টি সিনপটিক এডব্লিউএস স্থাপনের মাধ্যমে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির মানোন্নয়ন করা হবে। এ ছাড়া আবহাওয়া সদর দফতর কার্যালয়ের ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও ছয়টি বিভাগে জলবায়ু কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

Advertisement

পাশাপাশি সবগুলো আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘অঞ্চলভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস যদি সঠিকভাবে পাই তাহলে কৃষি ও মৎস্যসহ অন্যান্য বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব। পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে কী কী করা দরকার এবং কী কী করলে আমাদের জন্য লাভজনক হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।’

প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু এবং আবহাওয়া সম্পর্কে স্থানভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক সতর্কবাণী পাব, যেটি আগে পেতাম না। এতে আমাদের ফসলসহ গবাদি পশু ও জীবন রক্ষা পাবে।’

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল আবহাওয়ার আগাম সতর্কবাণী আরও বেশি উন্নত করা এবং যে সংকেতগুলো দেয়া হয় সেগুলোতে যেন ভুলের পরিমাণ কমে যায়। আমরা উপজেলা পর্যায়ে আবহাওয়া সেবাকে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্প্রসারিত করতে চাই। বিভিন্ন উপজেলায় এখন আবহাওয়ার তথ্য পাওয়া যায় না। অর্থাৎ যেখানে অটোমেটিক আবহাওয়া স্টেশন নাই। ২০০ উপজেলায় যখন আবহাওয়া স্টেশন বসে যাবে তখন প্রত্যেক উপজেলা থেকে নিয়মিত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটাগুলো পাব। তাহলে আমাদের ডাটার সংখ্যা বাড়বে এবং আগাম সতর্কবাণী আরও উন্নত হবে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কোন এক উপজেলায় স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন না থাকায় কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, তাপমাত্রা কী থাকে তা রেকর্ড করতে পারি না। কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করতে গিয়ে গত ৩০ বছরে বৃষ্টিপাতের ধরণ কী ছিল, তাপমাত্রা কী ছিল, বাতাস কোন দিক থেকে হয়- এ সমস্ত তথ্য প্রকল্প পর্যালোচনাকালে প্রয়োজন হয়। স্টেশন না থাকার কারণে আমরা এ সমস্ত তথ্য দিতে সক্ষম না। যখন স্টেশন হয়ে যাবে তখন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে আবহাওয়া ও পরিবেশগত যে বিষয়গুলো বিশ্লেষণের প্রয়োজন হবে সুনির্দিষ্টভাবে তা আমরা সরবরাহ করতে পারব।’

‘এখন যে পূর্বাভাস হয়, অনেক সময় এটিকে সাধারণ মানুষ বলে খুবই জেনারেলাইজ। বাংলাদেশে আমাদের এখন চাহিদা হলো সময় ও স্থানভিত্তিক পূর্বাভাস পাওয়া, যাতে আমরা প্রতিদিনের জীবন-জীবিকায় কৃষি উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদনে এটি ব্যবহার করতে পারি। এ তথ্য যতো বেশি আমরা সরবরাহ করতে পারব ততো বেশি সকলেই সমৃদ্ধভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এ তথ্য কৃষি, মৎস্য, পানি সম্পদসহ অর্থনীতির বিভিন্ন কাজে আসবে বলে আমাদের ধারণা। এ জন্য আমরা আবহাওয়া তথ্য নেটওয়ার্কে সারাদেশে সম্প্রসারিত করতে চাচ্ছি’ বলেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক।

প্রতিরক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, ‘আমরা যখন উপজেলাভিত্তিক যাব তখন স্থান ও সময়ভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করতে পারব। এতে আরও বেশি উপকৃত হব। উপজেলা কমপ্লেক্সে যে জায়গা দেয়া হচ্ছে তা ২২০ স্কয়ার ফিট। এ জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই।’

আরএমএম/এনডিএস/এমএস