লোকসভা নির্বাচনের ঠিক তিনদিন আগে গত সোমবার ইশতেহার প্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। মলাট বাদ দিলে মোট ৪২ পৃষ্ঠার ইশতেহারে ১২ বার ‘কর্মসংস্থান’ শব্দটি এবং ‘চাকরি’ শব্দটি তিনবার উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থান বা চাকরির সংখ্যা নিয়ে ইশতেহারে বিজেপি একটি শব্দও খরচ করল না।
Advertisement
গত লোকসভা নির্বাচনী প্রচারণায় নরেন্দ্র মোদি বছরে ২ কোটি নতুন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাই মোদিকে নিশানা করে, কংগ্রেসের ইশতেহারে রাহুল গান্ধী কর্মসংস্থানের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।
কিন্তু সোমবার বিজেপির ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দলটির সভাপতি অমিত শাহ চাকরির সুযোগ তৈরি নিয়ে নতুন কোনও প্রতিশ্রুতির পথে হাঁটলেন না। ক্ষমতায় ফিরলে নরেন্দ্র মোদি নিজের তৈরি দুই কোটি নতুন চাকরির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে কি করবেন তাও জানালেন না।
কংগ্রেস নেতারা বিজেপির ইশতেহারে চাকরি নিয়ে সঠিক প্রতিশ্রুতি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল, রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, রাজীব গৌড়াদের অভিযোগ, চাকরি তৈরি নিয়ে কথাবার্তাই বিজেপির ইশতেহার থেকে উধাও।
Advertisement
আরও পড়ুন>> বিজেপির ইশতেহার ‘এক বিচ্ছিন্ন মানুষের কণ্ঠস্বর’: রাহুল
সুরজেওয়ালা বলেন, ‘মোদি বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যার অর্থ, পাঁচ বছরে ১০ কোটি চাকরি। বাস্তবে এই পাঁচ বছরে চাকরির সংখ্যা ৪ দশমিক ৭ কোটি কমেছে।’
বিজেপির ইশতেহারে বলা বয়েছে, চাকরির সুযোগ তৈরি করতে অর্থনীতির ২২টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জোর দেয়া হবে। নতুন প্রজন্মের পরিকাঠামোয় বিপুল বিনিয়োগের কথাও রয়েছে, যা থেকেও কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
বিজেপির দাবি, ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছরে পরিকাঠামোয় ১২৬ লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে আসবে, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
Advertisement
রাহুল গান্ধীর ‘ন্যায়’ প্রকল্পের টাকা কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছিল। এবার বিজেপি নিজেই ১২৬ লাখ কোটি টাকার উৎস নিয়ে নীরব।
আরও পড়ুন>> কাশ্মীরি বিশেষ অধিকার আইন বাতিলের অঙ্গীকার মোদির
কংগ্রেসের অভিযোগ, নোট বাতিল ও তার রে জিএসটি’র কারণে বহু মানুষ আয়ের উৎস হারিয়েছিলেন। নোট বাতিল ও জিএসটি দুটোরই ধাক্কা লেগেছিল বিজেপির অন্যতম বড় ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদারদের ওপর।
বিজেপি তাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছোট-মাঝারি শিল্পে ১ লাখ কোটি টাকা খরচ হবে। জিএসটিতে নথিভুক্ত ব্যবসায়ীরা ১০ লাখ টাকার দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা পাবেন। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য বাজেটে ঘোষিত ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মানধন যোজনা’র আওতায় ছোট দোকানদারদের আনা হবে।
ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিএআইটি তাদের এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে। আদিবাসীদের কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি হবে ৫০ হাজার ‘বন ধন বিকাশ কেন্দ্র।’ উদ্যোক্তাদের জন্য ৫০ লাখ টাকা বন্ধকহীন ঋণ দেয়া হবে।
এসএ/পিআর