খেলাধুলা

বিশ্বকাপে সুযোগ পেলে চিন্তা করবো : সাইফউদ্দিন

সাত-আটে নেমে কার্যকরী ব্যাটিং এবং নতুন বলে সুইং ও লেন্থের মিশেলে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখা বোলিং- এ দুই মিলে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে দারুণ এক প্যাকেজ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার স্কোয়াডে থাকা একপ্রকার নিশ্চিতই বলা চলে।

Advertisement

তবে এখনো বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন না ফেনীর ২২ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। তার ধ্যানজ্ঞ্যান এখন পুরোপুরি চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দিকেই। যেখানে তার দল আবাহনী লিমিটেড লড়ছে টানা দ্বিতীয় শিরোপার জন্য।

আগামীকাল (বুধবার) শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে প্রথম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলবে আবাহনী। সে ম্যাচের আগে আজ (মঙ্গলবার) সংবাদমাধ্যমে বিশ্বকাপ ভাবনা, প্রিমিয়ার লিগের আলোচনাসহ ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার কথা বলেন সাইফউদ্দিন।

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা-না থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন এমন কিছু আমার মাথায় কাজ করছে না। আপাতত আমি ডিপিএলের ম্যাচগুলো নিয়ে চিন্তা করছি। যখন স্কোয়াড ঘোষণা হবে, যখন বিশ্বকাপের টিকেট হাতে পাব, তখন এ ব্যাপারে চিন্তা করব।’

Advertisement

২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা সাইফউদ্দিনের এখনো বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা হয়নি। এমনকি সে বছর হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও ছিলেন না তিনি। ফলে প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক কোনো আসরে খেলার রোমাঞ্চ কাজ করছে সাইফউদ্দিনের মাঝেও।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপে খেলার। যদি সুযোগ পাই অবশ্যই আমারও স্বপ্নপূরণ হবে। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের কন্ডিশন, নিজেকে প্রমাণ করার মত সবচেয়ে ভালো মঞ্চ বিশ্বকাপ। বিশেষ করে আমরা যারা জুনিয়র প্লেয়ার, তাদের জন্য। ভালো করলে সামনে আরও ভালো সুযোগ আসবে। চেষ্টা করব নিজের শতভাগ দেয়ার।’

বিশ্বকাপ ভাবনার ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় চলতি প্রিমিয়ার লিগ নিয়েও। টুর্নামেন্টের মাঝপথে শঙ্কা জেগেছিল হয়তো আর খেলতে পারবেন না সাইফউদ্দিন। তবু টেনিস এলবোর ইনজুরি নিয়ে ডিপিএলে খেলে যাচ্ছেন তিনি। পরামর্শ ছিলো যারা নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজ খেলে এসেছে তাদের অন্তত ৭-১০ দিন বিশ্রাম নেয়ার।

তা না করে মাঠে নেমে পড়ায় এবং নিয়মিত ব্যাটিং-বোলিং করায় গাঢ় হয়েছে সাইফের ইনজুরি। এমতাবস্থায় বিশ্বকাপে সুযোগ পেলেও হয়তো ত্রিশ গজের ভেতরেই ফিল্ডিং করতে হবে তাকে। কারণ জোরে থ্রো করার মতো অবস্থা নেই সাইফউদ্দিনের। তবে ২১ দিন সবধরনের খেলা বন্ধ রেখে ইনজেকশন নেয়া হলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন তিনি।

Advertisement

কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এটিও প্রায় অসম্ভবই। তবে এতে চাপ নিচ্ছেন না সাইফউদ্দিন। বরং নিজেদের শক্তিমত্তার প্রতি বিশ্বাস রাখার প্রত্যয় তার কণ্ঠে। সাইফউদ্দিন বলেন, ‘আসলে চাপের কিছু নেই। মাশরাফি ভাই সবসময় বলে, যে যত বেশি আত্মবিশ্বাসী তার কাজ তত সহজ। আমরা হয়তো রাবাদাদের মতো ১৫০ গতিতে বল করতে পারব না। তবে আমরা ১৩০ এর ঘরেই লাইন লেন্থ মেপে, সুইং করতে পারলে অবশ্যই ভালো কিছু আশা করা যায়।’

চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম নয় রাউন্ডের মধ্যে ৮টিতে জিতে সমানতালে লড়ছিলো সাইফউদ্দিনের আবাহনী এবং লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে দশম রাউন্ডে আবাহনীকে উড়িয়ে দিয়ে এককভাবে শীর্ষস্থান দখল করেছে রূপগঞ্জ।

এতে অবশ্য ভড়কে যাননি সাইফউদ্দিন তথা আবাহনী। এখনো শিরোপা জেতা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে সবাই একটা বাজে দিন পার করেছি। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত না। যেহেতু এখনো ছয়টা ম্যাচ আছে, সুপার লীগের পাঁচটা সহ। আমরা খুব একটা দূরে নেই। রূপগঞ্জ থেকে মাত্র দুই পয়েন্ট দূরে আছি আমরা। আমরা যদি ভালো কামব্যাক করি, আমরা অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবীদার।

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে ম্যাচে না হারলে তো টুইস্ট হয় না। এটা খুব বেশি না, মাত্র দুই পয়েন্ট। ওদের সাথে আমাদের আরেকটা ম্যাচ হবে সুপার লীগে। প্রথমটায় হেরেছি, আশা করি পরেরটায় জিতব। আর সুপার লীগে মোটামুটি সব গুলো দলই ভালো। একে অন্যকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আমরা যদি ব্যাক টু ব্যাক চার-পাঁচটা ম্যাচ জিতে যাই, তাহলে আবার রেসে চলে আসব।’

এসময় সুপার লিগের ব্যাপারে আশাবাদী মন্তব্য শোনা যায় এ পেস বোলিং অলরাউন্ডারের কণ্ঠে, ‘সুপার লিগে মনে হয় রিজার্ভ ডে আছে, কার্টেল ওভার আছে। কার্টেল ওভার হলে আমাদের দলে বেশ কিছু হার্ড হিটার আছে। রুম্মন (সাব্বির রহমান) ভাই বাংলাদেশের সেরা। আমি, মাশরাফি ভাই আছি বোলিংয়ে।’

এসএএস/এমএস