জাতীয়

নিজ সদর দফতরে সোহেল, ভেজা চোখে জানাজা পড়লেন সহকর্মীরা

বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে আটকে পড়াদের বাঁচাতে গিয়ে নিহত ফায়ারম্যান সোহেল রানার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার সহকর্মী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ও তার ছোট ভাই।

Advertisement

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফুলবাড়িয়ার সদর দফতরে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন, সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান, এনটিএমসির ডিজি জিয়াউল আহসান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমইএচ) মর্চুয়ারিতে থেকে সদর দফতরে আনা হয় সোহেলের মরদেহ। জানাজার পর সহকর্মীদের শ্রদ্ধা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনায় নেয়া হবে।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন রানা। ২৩ তলা ওই ভবনে আটকা পড়াদের ল্যাডারের মাধ্যমে নামাচ্ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন : সকালে ফায়ার ফাইটার সোহেলের জানাজা, দাফন গ্রামে

সোহেল যখন ৪-৫ জন উদ্ধার করে নিচে নামাচ্ছিলেন তখন উদ্ধারকারী ল্যাডারটি ওভারলোড দেখাচ্ছিল। ওভারলোড হলে সাধারণত সিড়ি নিচে নামে না স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। তাই ল্যাডারের ওজন কমাতে এক পর্যায়ে সোহেল ল্যাডার থেকে বেয়ে নিচে নামছিল। ল্যাডারের ওজন কমায় সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায়। ল্যাডারের ভেতরে সোহেলের একটি পা ঢুকে যায়। এ ছাড়া তার শরীরের সেফটি বেল্টটি ল্যাডারে আটকে পেটে প্রচণ্ড চাপ লাগে। এরপর থেকেই সংজ্ঞাহীন ছিলেন সোহেল।

দুর্ঘটনার পরপরই সোহেল রানাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানে প্রতিদিন চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হচ্ছিল না। পেটের ক্ষতের কারণে সমস্যা হচ্ছিল রানার।

Advertisement

সে কারণে সিএমএইচের চিকিৎসকদের পরামর্শে গত শুক্রবার রানাকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। তার দেখাশোনা করার জন্য ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রায়হানুল আশরাফকেও তার সঙ্গে পাঠানো হয়।

রোববার দিবাগত রাতে সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সোমবার রাতে বিমানযোগে তার মরদেহ ঢাকায় এনে সিএমএইচের মর্চুয়ারিতে রাখা হয়।

২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও হাসপাতালে এক জন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ৭৩ জন আহত হয়েছে। সোহেলের নিহতের মাধ্যমে এফআর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়াল।

এআর/এএইচ/এমকেএইচ