ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আপাতত সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নুসরাতের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ ঘণ্টা জার্নি করে নুসরাতের মতো রোগীকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া ঝুঁকির। অবস্থা স্থিতিশীল হলে তখন সিঙ্গাপুর নেয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
সকাল সাড়ে ৯টায় ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা।
এরপর সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে সাংবাদিকদের একথা বলেন নুসরাতের চিকিৎসার বিষয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সকাল ৯ টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি মাদ্রাসা ছাত্রী রাফির সম্পর্কে। আমরা নুসরাতের সমস্ত চিকিৎসা সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আদানপ্রদান করেছি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তা দেখে আপাতত নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে নেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : নুসরাতকে সিঙ্গাপুর নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
Advertisement
তারা আমাদের বলেছেন, নুসরাতকে এই অবস্থায় দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার বিমানযাত্রা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এজন্য এখন তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো ঠিক হবে না। একটু স্টেয়াবল (স্থিতিশীল) হোক তখন এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসকরা নুসরাতের জন্য নতুন কিছু চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা পরামর্শ গুলো চিকিৎসা ব্যবস্থায় যোগ করবো। কিছু পরীক্ষাও দিয়েছে।
আরও পড়ুন : মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ফেনীর নুসরাত
কিছুক্ষণ পর নুসরাতকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হবে ড্রেসিং করার জন্য। বিকেলে আবার সিঙ্গাপুর হাসপাতাল সাথে কথা হবে। আমরা বিষয়টি ওর বাবা-মা কেউ বুঝিয়েছি।
Advertisement
আগামী ১৭ এপ্রিল সিঙ্গাপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা পাঁচ দিনের জন্য ঢাকা মেডিকেল আসবেন। নুসরাত যদি ততদিন স্টে করে তাহলে তারা তাকেও দেখবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাহ -এমন অভিযোগ এনে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
ওই ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অন্যদিকে আরেকটি অংশ শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
এদিকে এ ঘটনায় গত রোববার থেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জেইউ/এমএমজেড/এমকেএইচ