দেশজুড়ে

সবার গাড়ি আটকে পরীক্ষার্থীদের রাস্তা ফাঁকা করে দিলেন ইউএনও

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পর থেকে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩১টি ক্যাম্প ঘিরে কাজ করছে সরকারি-বেসরকারি শতাধিক সহযোগী সংস্থা। এসব সংস্থায় কর্মরতদের বহন করে প্রতিদিন ক্যাম্পে আসে অর্ধসহস্রাধিক যানবাহন।

Advertisement

এসব যানবাহনের কারণে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের সোনারপাড়া থেকে কোটবাজার-উখিয়া-বালুখালী-পালংখালী পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। গত এক বছরের নিয়মিত চিত্র এটি।

এরই মধ্যে ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন সকাল পৌনে ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এনজিও সংস্থার কর্মীবাহী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় উখিয়া উপজেলা প্রশাসন।

কিন্তু এনজিও সংস্থার কর্মীবাহী যানবাহনগুলো এ আদেশ মানছে না। এ অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যানজটে পড়ে। যানজটে পড়ে সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে ব্যর্থ হয় শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত রাস্তায় নেমেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী। সোমবার সকাল ৯টার দিকে নিজের গাড়ি থেকে নেমে হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান তিনি। আটকে দেন এনজিও সংস্থার সব গাড়ি। একই সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বহনকারী গাড়িগুলোকে আগে যেতে দেন তিনি।

সকালে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে উখিয়া সদর এলাকার সড়কে এ দৃশ্য দেখা যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলে ইউএনওর এমন কাজ। এনজিও সংস্থার সবগুলো গাড়ি সাইড করে শিক্ষার্থীদের বহনকারী যানবাহনগুলো আগে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করেন (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী।

ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় ইউএনও মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরীকে দায়িত্ব পালন করতে দেখে স্থানীয়রা কয়েকটি ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। সেই সঙ্গে ইউএনওর এমন মহতী কাজকে সাধুবাদ জানান তারা। এরই মধ্যে ইউএনওর সেসব ছবি ভাইরাল হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে ইউএনও মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী উখিয়া সদর এলাকায় এসে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় অবস্থান নেন। এ সময় চলাচলকৃত এনজিও সংস্থার গাড়িগুলো আটকে দেন। একই সঙ্গে নির্দেশ না মানায় এনজিও কর্মকর্তাদের ভর্ৎসনা করেন তিনি। প্রায় আধা ঘণ্টা সড়কে অবস্থান করে গাড়িগুলো উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে পার্কিং করান তিনি।

Advertisement

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় এনজিওর গাড়িগুলো চলাচল করে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে পড়ে পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারে না। এরই প্রেক্ষিতে ওই সময়ে গাড়ি চলাচল না করতে এনজিও সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করে গাড়ি চলাচল অব্যাহত রাখে। তাই নিজেই নেমে গাড়িগুলো আটকে দিয়েছি। সামনের পরীক্ষার দিনে এমন কাজ করা হলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সায়ীদ আলমগীর/এএম/জেআইএম