ভ্রমণ

ঘুরে আসতে পারেন নয়নাভিরাম পাকশী রিসোর্টে

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে একটি আধুনিক রিসোর্ট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নিরিবিলি পরিবেশের কারণে পাকশী সব সময়ই ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করে। সেই বৃটিশ আমলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে বিভিন্ন সময় দাবি উঠেছে এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করার। কিন্তু কে শোনে কার কথা। অবশেষে শিল্পপতি আকরাম আলী খান সঞ্জু নিজ উদ্যোগে ২০০৯ সালে পাকশী রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। জানা গেছে, পাকশী রিসোর্ট পাবনা জেলার পদ্মা নদীর পাশে অবস্থিত। ঢাকা থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার পথ। যমুনা সেতু থেকে এক ঘণ্টার রাস্তা। পাকশী রিসোর্টে যাওয়ার পথে আপনার চোখ জুড়িয়ে দেবে দুপাশের ধান ক্ষেত। আর চিরচেনা সবুজের সমারোহ।  এ রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য রয়েছে দুইতলা বিশিষ্ট টালি দ্বারা নির্মিত দুইটি ভবন। এর প্রতিটি কক্ষই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সব কিছুই অত্যন্ত পরিপাটি, সাজানো গোছানো। ভিতরের আসবাবপত্র রুচিশীল, মূল্যবান এবং অভিজাত। রয়েছে বিশাল ডাইনিং হল। বুফে এবং বারবিকিউ এর ব্যবস্থা। দক্ষিণা হাওয়া ও শিশির ভেজা রিসোর্টের লন আর নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ আপনাকে সতেজ করবে খুব অল্প সময়ে। রিসোর্টে বেড়াতে আসা ময়মনসিংহের আশরাফ সিদ্দিকী ও তরিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এখানকার পরিবেশ ভাল। তবে রিসোর্টটি রেলওয়ের জায়গায় না হয়ে নিজস্ব জায়গায় হলে এটি আরো আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট হতে পারতো। আরো জানা যায়, রিসোর্টের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান, চায়নিজ, থাই কিংবা অন্যান্য বিদেশি খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে। পাবেন দেশি ও বিদেশি ফলের নানা রকম জুস, বেকারি ও পেস্ট্রি সপ। রিসোর্টের ভেতরে খেলতে পারেন নিজের মতো করে। আছে লং টেনিস, বাস্কেট বল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড, কেরাম ও দাবাসহ আরো নানা ধরনের ইনডোর গেইমস। হাঁটতে পারেন ফুলের বাগান বা লেকের ধারে। সাঁতার কাটতে পারেন সুইমিং পুলের স্বচ্ছ পানিতে। ইচ্ছে করলে বসতে পারেন লেকের ধারে। হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হলে বসতে পারেন শান্ত বটের ছায়ায়। মন চাইলে কুঁড়ে ঘরে বিশ্রামও নিতে পারেন। এখানে আছে দেশি বিদেশি প্রায় ৪ শতাধিক নানা প্রজাতির গাছ ও ফলের বাগান।  রিসোর্টের কাছেই পদ্মা নদী। মাত্র ১০ মিনিটের পথ। বিকেল বেলা ঘুরতে পারেন পদ্মা নদীর ধারে। নৌকায় ভাসতেও পারেন। ইচ্ছে হলে বরশি দিয়ে মাছও ধরতে পারেন।এখানে আছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। যেখানে দেখতে পাবেন চিত্রা হরিণ, বানর, তোর্কি ও কালিম পাখি। উদ্যানে আছে অসংখ্য অকির্ড। বিশাল লেক, যেখানে আপনি পায়ে চালিত নৌকায় বোটিং করতে পারেন। আছে নানা প্রজাতির পাখি। খেতে পারেন পিঠা-পায়েস, ঢেঁকি ছাটা চালের ভাতও। যারা নগর জীবনের ক্লান্তিতে হাঁপিয়ে উঠেছেন কিছুটা সময়ের জন্য একটু নির্মল বাতাস আর আনন্দ পেতে চান তারা নির্দ্বিধায় চলে যেতে পারেন পাকশী রিসোর্টে। সেই সঙ্গে আপনি  উপভোগ করতে পারেন লোকজ সঙ্গীত। এখানে পরিবার নিয়ে থাকা, খাওয়াসহ পিকনিক ও নাটক, সিনেমার সুটিং করার বিশেষ সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।রিসোর্ট সম্পর্কে এর প্রতিষ্ঠাতা আকরাম আলী খান সঞ্জু বলেন, এটি এখনো লাভজনক করা সম্ভব হয়নি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঢাকার সঙ্গে ঈশ্বরদীর যোগাযোগ আরো সহজ করতে হবে। বিশেষ করে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি চালু হলে পর্যটকরা সহজে আসা-যাওয়া করতে পারতেন। এসএস/পিআর

Advertisement