টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে সিলেট নগরে হাঁটুজল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি জমে জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। গত রোববার রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাতে নগরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়িতে।জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে নাইওরপুল এলাকায় অবস্থিত সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের সদরদফতরেও। জনগুরুত্বপূর্ণ এই অফিসেও পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার সকালে নগরে যানবাহনও কম। এতে অফিসগামী মানুষজন ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।টানা এ বৃষ্টির ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার সকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহত্তর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, সুবিদবাজার ও পাঠানটুলা এলাকার ৮০ ভাগ দোকানেই পানি ঢুকে হাঁটুজলের সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বই ও মুদি দোকানিদের।সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার ভোর ছয়টা থেকে সোমবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৮ মিলিমিটার। সোমবার ভোর ছয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮৫ মিলিমিটার। মঙ্গলবার ভোর ছয়টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এ অবস্থায় নগরবাসী পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, নগরের বিভিন্ন মার্কেটে ড্রেনের পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় পানি ঢুকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয়েছে। ফলে অনেক ক্ষতি হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নগরের বেশিরভাগ বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন লোকজন। কলোনিগুলোতে ২ থেকে ৩ ফুট পানি জমে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে আছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।দু’দিনের টানা বৃষ্টি হওয়াতে নগরের ঘাসিটুলা, কলাপাড়া, সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, শাহজালাল উপশহর, শিবগঞ্জ, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, হাওয়াপাড়া, শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, নাইওরপুল, নয়া সড়ক, বারুতখানা, যতরপুর, সোনাপাড়া, টিলাগড়, শাপলাভাগ, শামিমাবাদ, কানিশাইল, কাজলশাহ, ভাতালিয়া, বাদামবাগিচা, পীরমহলা, কুমারপাড়া, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীরপাড়, লালদিঘী, মাছুদিঘীরপাড়, রায়নগর, দর্জিবন্দ, দক্ষিন সুরমার গোঠাটিকর, কদমতলি, খোজারখলা, মোমিনখলা, লাউয়াইসহ বিভিন্ন মহলার ভেতরের ছোট ছোট রাস্তার মধ্যে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। জিন্দাবাজারের বাসিন্দা জামাল আহমদ জাগো নিউজকে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে নগরের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আসছে জলাবদ্ধতা। তা সত্ত্বেও মহানগরের পানি নিষ্কাশনে ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের উদাসীন মনোভাবের কারণে বার বার এ সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন নগরবাসী।সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে সিলেটে একটু বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষাকালে সিলেটে প্রায় ৬০০ মিলিমিটারের কিছু বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এবার সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। পুরো সেপ্টেম্বর মাস জুড়েই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ মাসের মাঝামাঝিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসবে।ছামির মাহমুদ/এমজেড/এমএস
Advertisement