এ বছর ভোলায় গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি আবাদ হয়েছে তরমুজ। তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া এলাকার ক্ষেতগুলোতে তরমুজের ব্যাপক সমারোহ। আকার বড় ও ফলন ভালো হওয়ায় ফসল তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে ভোলার বাজারগুলোতে তরমুজ বেচাকেনা জমে উঠেছে।
Advertisement
ভেলুমিয়া এলাকার তরমুজ চাষি হারুন ব্যাপারী বলেন, ‘আমি গত ১৫ বছর ধরে এ গ্রামে তরমুজ চাষ করছি। এ বছর চার একর জমিতে চাষ করি। এতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ক্ষেতে ফসল ভালো হয়েছে। আশা করি অনেক লাভবান হবো।’
মনির রাঢ়ি বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার টাকার তরমুজ পাইকারি বিক্রি করেছি। ক্ষেতে যে পরিমাণ ফসল আছে, তাতে ২ লাখ টাকার মতো তরমুজ বিক্রি করতে পারবো।’
> আরও পড়ুন- জাফরান চাষে সফল শেকৃবির গবেষকরা
Advertisement
বোরহানউদ্দিন উপজেলার চর লতিফ এলাকার তরমুজ চাষি ইসমাইন মিয়া বলেন, ‘এ বছর প্রথম দিকে তরমুজের পাইকারি বাজার অনেক চড়া ছিল। দামটা যদি আরও কিছুদিন থাকে, তাহলে এবার তরমুজ চাষিরা তিন-চারগুণ লাভবান হবে।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, গত বছর জেলায় তরমুজ আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৫০ হেক্টর জমি। বৃষ্টির কারণে আবাদ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৬০ হেক্টর। তরমুজ উৎপাদন হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন। এ বছর তরমুজের আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ৩ হাজার ১৬০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৪৯১ হেক্টর। যা গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি। উৎপাদনও তিনগুণ হবে বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর তরমুজের আবাদ তিনগুণ হয়েছে। বর্তমানে বাজারও অনেক ভালো রয়েছে। কৃষকরা গত বছরের লোকসান কাটিয়ে এবার দ্বিগুণ লাভবান হবে। আগামীতে অনেক কৃষক তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।’
> আরও পড়ুন- অনাবাদী জমিতে আমলকি চাষে সফল আব্দুল হাই
Advertisement
ভোলার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্তকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সঠিক সময়ে কৃষকরা আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ক্ষেতে সঠিক ওষুধ ব্যবহারের ফলে ক্ষেতে কোন প্রকার পোঁকা-মাকরের আক্রমণ হয়নি। এছাড়া তরমুজের আকার বড় করে বেশি লাভবান হওয়ার জন্য কৃষকদের সুষম সার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসইউ/এমএস