জাতীয়

কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে অপ্রত্যাশিত খাত থেকে বরাদ্দ চায় ইসি

>> অপ্রত্যাশিত খাতের অর্থ দৈব-দুর্বিপাক বা দুর্যোগের সময় ব্যয় করা হয়>> ইসির প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১২১ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা>> অতিরিক্ত চায় ৩২ কোটি টাকা

Advertisement

নানা কারণে ভোটাধিকার প্রয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে জনগণ। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে ১০৭ উপজেলায় মাত্র ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অথচ ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের কমতি নেই। এ খাতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১২১ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্দের পরও বাজেটে রক্ষিত ‘অপ্রত্যাশিত খাতে’ থেকে আরও ৩২ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি। তবে এক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ দিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেছে অর্থ বিভাগ।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২১ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। গত ১২ মার্চ পর্যন্ত বরাদ্দের এ অর্থের মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১১১ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখনও অব্যয়িত রয়েছে ৯ কোটি ৫১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। তবে এ খাতে চলতি অর্থবছরে আরও ৩২ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে জানিয়েছে ইসি। একই সঙ্গে এ অর্থ বাজেটে রক্ষিত ‘অপ্রত্যাশিত খাতে’ থেকে চাওয়া হয়েছে। তবে এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

Advertisement

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, অপ্রত্যাশিত খাতের অর্থ সাধারণত দৈব-দুর্বিপাক বা দুর্যোগের সময় ব্যয় করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২ হাজার কোটি টাকা। যা গত নভেম্বর মাসেই শেষ হয়ে গেছে। এখন কোনো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ দেয়ার প্রয়োজন পড়লে ইতোমেধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে দিতে হবে। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ নয় যে অন্য খাতের বরাদ্দ থেকে টাকা নিয়ে এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হবে। তাই অর্থ মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে না করে দিয়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের ৫ মাসেই বাজেটে রক্ষিত ‘অপ্রত্যাশিত খাতে’ ব্যয় বরাদ্দ শেষ করে ফেলেছ সরকার। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে অপ্রত্যাশিত খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন খাতে এই অর্থ নভেম্বর মাসের মধ্যেই সব ছাড় করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিগত ১০ বছরের মধ্যে আর কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানা গেছে।

এরপরও ইভিএম কেনাসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিতভাবে অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন পড়েছে। অন্য খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে এসব ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও বেশকিছু এলাকায় নির্বাচন শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে আরও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচন ব্যয় খাতে ঘাটতি ৫৭৩ কোটি টাকা চাওয়া হলে অর্থ বিভাগ কর্তৃক জরুরি ভিত্তিতে ৮৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ খাতে অতিরিক্ত ৩২ কোটি টাকা চাওয়া হলেও তার সংস্থান করা হয়নি। নির্বাচন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ওতপ্রোতভাবে জাড়িত বিধায় অতি সত্ত্বর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ব্যয় খাতের অর্থ সংস্থানের জন্য অনুরোধ করা হলো।

Advertisement

এমইউএইচ/এমবিআর/এমএস