দলের লোকজন তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়। তিনিও কয়েক দিন আগে উত্তরবঙ্গের ভোট-প্রচারে গিয়ে বলেছেন, এ বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে বাংলাই পথ দেখাবে। আরও একধাপ এগিয়ে শনিবার হাসিমারার জনসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে বললেন, ‘এবার তৃণমূলের নেতৃত্বেই কেন্দ্র সরকার হবে। বাংলাই ভারত গড়বে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক মহল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে।
Advertisement
আঞ্চলিক দলগুলোর শক্তিবৃদ্ধি করে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের ক্ষেত্রে মমতাই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তার আহ্বানেই কলকাতার ব্রিগেডে দেশের সব আঞ্চলিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা জড়ো হয়েছিলেন। এমনকী, কংগ্রেসের তরফ থেকেও প্রতিনিধি এসেছিলেন মমতার ‘সংযুক্ত ভারতে’র মঞ্চে।
তার পরে দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বারবার ওই বিরোধী নেতাদের নিয়ে বৈঠকেও তৃণমূল নেত্রীর ভূমিকাও নজরে পড়ার মতো ছিল। তাই তৃণমূলের নেতৃত্বে কেন্দ্রের সরকার গঠনের কথা বলে মমতা কী ইঙ্গিত দিলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
অনেকেই বলছেন, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে যোগ-বিয়োগের অঙ্ক কষে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে তৃণমূল নেত্রী তার নিজের দাবি পেশ করে রাখলেন। মমতা অবশ্য এর আগে বারবার বলেছেন, তিনি কোনও পদের জন্য লালায়িত নন। তার কাজ বিজেপিবিরোধী সরকার গড়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভূমিকা নেওয়া। বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা আলোচনা সাপেক্ষে তখনই ঠিক হবে।
Advertisement
এই অবস্থায় তৃণমূলের নেতৃত্বে সরকার গঠনের বক্তব্য এক নতুন মাত্রা যোগ করল। বারভিশা এবং হাসিমারায় মমতা বিজেপিকে হঠাতে কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোট না দিয়ে শুধুই জোড়াফুলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বলেছেন, দিল্লির সরকারকে বদলে দিন। তৃণমূলের নেতৃত্বে সরকারই মানুষের জন্য লড়বে, গড়বে ও জয় করবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মিথ্যাবাদী, লুঠেরা বলে অভিযোগ করে মমতা বলেন, মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতাই নেই। শুধু জোর গলায় মিথ্যা কথা বলেন। ৫৬ ইঞ্চির ছাতি নিয়ে ৫৬০ ইঞ্চি মিথ্যা বলেন। রামায়ণের রাবণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, রাবণেরও ৫৬০ ইঞ্চি ছাতি ছিল। কিন্তু কেউ তাকে পছন্দ করে না।
আরএসএসের সমালোচনা করে মমতা বলেন, আগে আরএসএস-এর জন্য একটা সম্মান ছিল। ভাবতাম কিছু ভাল নেতা রয়েছেন। কিন্তু এখন দেখছি, শপিং মলের মতো হয়ে গিয়েছে ওদের সংস্কৃতি। বিজেপির হয়ে কাজ করছেন।
টিটিএন/এমএস
Advertisement