সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কিংবদন্তী পেসার লাসিথ মালিঙ্গার জায়গায়। তাই তার প্রতি আশাটাও ছিলো অমনই উঁচু। তবে ম্যাচে উইন্ডিজের ২২ বছর বয়সী তরুণ আলঝারি জোসেফ যা দেখালেন, ততোটাও হয়তো আশা করেনি মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।
Advertisement
শনিবার রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচেই জোসেফ গড়েছেন আইপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। মাত্র ১২ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে হায়দরাবাদকে অলআউট করেছেন ৯৬ রানে।
জোসেফের এমন তাণ্ডবলীলার কল্যাণে মাত্র ১৩৬ রানের পুঁজি নিয়েও ৪০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে মুম্বাই। ফলে সমান ৫ ম্যাচ খেলে তিনটি করে জয় নিয়ে সমান্তরালে অবস্থান করছে হায়দরাবাদ ও মুম্বাই।
আগের চার ম্যাচের তিনটিতে শতাধিক এবং অন্যটিতে পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েছিলেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং ডেভিড ওয়ার্নার। যে কারণে মুম্বাইয়ের করা ১৩৬ রানের সংগ্রহটি মনে হচ্ছিলো খুবই সাদামাটা।
Advertisement
কিন্তু চতুর্থ ওভারে বেয়ারস্টোকে মাত্র ৩৩ রানের মাথায় সাজঘরে পাঠিয়ে দেন লেগস্পিনার রাহুল চাহার। ১০ বলে ১৬ রান করা বেয়ারস্টো এ নিয়ে টানা পঞ্চম ইনিংসে ধরা পড়লেন কোনো লেগস্পিনারের কাছে। হায়দরাবাদের আসল বিপদের শুরুটা হয় পঞ্চম ওভারে, জোসেফ প্রথমবারের মতো বল হাতে নিলে।নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারকে (১৩ বলে ১৫) সরাসরি বোল্ড করে দেন জোসেফ। এমন স্বপ্নিল শুরুর পর পুরো ম্যাচে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ২২ বছর বয়সী এ যুবাকে।
টুর্নামেন্টে আগের ৪ ম্যাচেই দুই ওপেনারের কল্যাণে পার পেয়েছে হায়দরাবাদ। জোসেফ-চাহারের আক্রমণে প্রথমবারের মতো পরীক্ষার মুখে দলের মিডলঅর্ডার। যে পরীক্ষায় পুরোপুরি অকৃতকার্য মনিশ পান্ডে (১৬), বিজয় শঙ্কর (৫), দীপক হুদা (২০), ইউসুফ পাঠান (০) ও মোহাম্মদ নবীরা (১১)।
প্রথম বলেই ওয়ার্নারের উইকেট নেয়া জোসেফ পরে একে একে সাজঘরে পাঠান বিজয় শঙ্কর, দীপক হুদা, রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার ও সিদ্ধার্থ কাউলকে। হায়দরাবাদ ১৮তম ওভারে অলআউট হওয়ার সময় জোসেফের বোলিং ফিগারঃ ৩.৪-১-১২-৬! যা কি-না আইপিএলের ইতিহাসে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
জোসেফের ৬ উইকেটের সঙ্গে রাহুল চাহার ২ এবং জেসন বেহেন্ডর্ফ ও জাসপ্রিত বুমরাহ ১টি করে উইকেট নিলে আইপিএলে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৯৬ রানে অলআউট হয় হায়দরাবাদ। মুম্বাই পায় ৪০ রানের দারুণ এক জয়।
Advertisement
এর আগে হায়দরাবাদ বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। রোহিত শর্মা (১১), কুইন্টন ডি কক (১৯), সূর্যকুমার যাদব (৭), ইশান কিশান (১৭), ক্রুনাল পান্ডিয়া (৬), হার্দিক পান্ডিয়া (১৪)-একের পর এক করে সাজঘরে ফিরেছেন ব্যর্থ হয়ে।
৯৭ রানে ৭ উইকেট হারানো দলকে কোনোমতে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন কাইরন পোলার্ড। ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার ২৬ বলে ২ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় খেলেন ৪৬ রানের হার না মানা ইনিংস।
অষ্টম উইকেটে একাই স্ট্রাইক নিয়ে নিয়ে ২ ওভারে ৩৯ রান যোগ করেন পোলার্ড। সঙ্গে থাকা আলজেরি জোসেফকে একটি বলও মোকাবেলা করতে হয়নি।
হায়দরাবাদের সিদ্ধার্থ কাউল নেন ২টি উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার, সন্দীপ শর্মা আর মোহাম্মদ নবীর।
এসএএস/আরএস