ভারতের কলকাতা থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ ‘আরভি বেঙ্গল গঙ্গা’ শনিবার বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ফতুল্লার পাগলা মেরি এন্ডারসনে সফল যাত্রা বিরতি করেছে। এ সময় সেখানে ভারত থেকে আসা পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
Advertisement
এর আগে ২৯ মার্চ, ৬১ জন পর্যটকসহ ১৩৭ জনের প্রথম বহর নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যায় এমবি মধুমতি। পাগলায় মেরি এন্ডারসনের ভিআইপি ঘাট থেকে ওই জাহাজ ছেড়ে ৩১ মার্চ দুপুরে কলকাতা পৌঁছায়।
দুই দেশের মধ্যে সফল এ নৌ-যোগাযোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সন্ধ্যায় পাগলা মেরি এন্ডারসনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশ থেকে কলকাতা ও কলকাতা থেকে বাংলাদেশ- দুটি জাহাজই কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়া চলাচল করছে। আমরা এতে সন্তুষ্ট। আগামীতে আরও অত্যাধুনিক ক্রুজ যাতে সম্পৃক্ত হয়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, পরীক্ষামূলক জাহাজ চলাচলে আমরা সফল হয়েছি। এবার বাণিজ্যিকভাবে দুই দেশে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Advertisement
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নৌ-পথে ক্রুজ সার্ভিস চালু হওয়ার পর সেই সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে। নৌ-পথে যাত্রা একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ভালো একটি সূচনা হয়েছে ভ্রমণের।
‘অনেকেই এখন এসব ক্রুজ যাত্রা পছন্দ করেন। তারা ভারতে যাতায়াত করবেন। এটাকে আমাদের নিয়মিত করতে হবে। ইতোমধ্যে ভিসা প্রদানও বেশ সহজ হয়েছে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মেরি এন্ডারসনে আসা ভারতের জাহাজটিতে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়ার ছয়জন পর্যটকসহ ১৯ যাত্রী ও ৩০ জন ক্রু ছিল। এর মধ্যে ছিলেন ভারতের মোদি সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া দীপক বড়ুয়া, ইন্ডিয়া ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (আইডব্লিউআই) সাবেক চেয়ারম্যান নোটন গুহ বিশ্বাস, আর ভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিংসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী।
গত ২৯ মার্চ দুপুর সাড়ে বারোটায় ভারতের কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে জাহাজটি। সুন্দরবন হয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার আংটিহারা বন্দরে এটি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে নোঙর করে।
Advertisement
শনিবার সকালে পর্যটকরা সোনারগাঁয়ের জাদুঘর, বড় সরদার বাড়ি, পানামনগরী, জামদানী পল্লীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন।
ভারত থেকে বাংলাদেশে নৌ-পথের এ ভ্রমণকে আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণ উল্লেখ করে বিদেশি পর্যটকরা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদের মুগ্ধ করেছে। এ ভ্রমণ তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ যোগাযোগ ব্যবস্থার সাফল্যও কামনা করেন তারা।
এইউএ/এমএসএইচ/এমএস