ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বললেন, আমরা সব চৌকিদার! এ পর্যন্ত বলে একটু থামলেন তিনি, এর মাঝেই পেছন থেকে ২০ বছর বয়সী এক যুবক বলে উঠলেন, ‘চোর হ্যায়।’ এ সময় তার পাশে থাকা অপর এক ব্যক্তি মাথার পেছনে কষিয়ে থাপ্পড় মারেন। থাপ্পড় যিনি দিলেন, তার মাথায় ‘বিজেপি’ লেখা টুপি। জামার উপরে অনলাইনে অর্ডার করা ‘নমো এগেন’ জ্যাকেট।
Advertisement
থাপ্পড় খাওয়া যুবক সেই সময় বলেন, ‘টিভিতেই তো শুনেছি। মারছ কেন?’ এ কথা বলেই ভিড়ে মিশে যান। মোদির জনসভায় একেবারে পেছনে, ভিড়ে বাড়তি সুবিধা আছে। মঞ্চের সামনের দিকে ভিড় থাকা লোকজনের বরাবরের মতো একটিই কাজ: ‘মোদি-মোদি-মোদি’। বাসে-ট্রেনে-ট্রাক্টরে আনা ভিড়। তাদের অনেকের গলায় ঝোলানো ‘ভিআইপি’ পাস। পেছন দিকে আমজনতা।
দূর থেকে ‘ছোট্ট’ মোদিকে দেখার একটাই উপায়। পেল্লাই এক-একটি এলইডি স্ক্রিন। জনতা তাতে দেখছেন, আর মাইকে শুনছেন। ভিড় এগোচ্ছে কি এগোচ্ছে না, মোদি নির্ঘাত বলবেন, ‘আর এগোনোর চেষ্টা করবেন না। যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। আমিও আপনাদের দর্শন করতে পারছি না, আপনারাও আমাকে। চলুন, একে অন্যের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই।’
আরও পড়ুন : মালিক গেলেন বাসার বাইরে, প্রেমিককে ডেকে ধরা প্রবাসী গৃহকর্মী
Advertisement
আনন্দবাজারের প্রতিবেদক দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এক প্রতিবেদনে লিখেছেন, মোদিকে দেখার উৎসাহে খামতি আছে, এমন নয়। সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ২টায়। ১৫ মিনিট আগেই মঞ্চের পেছন থেকে আলো জ্বালিয়ে তিনটি হেলিকপ্টার ধুলো উড়িয়ে ধেঁয়ে এল। হাতে হাতে মোবাইল উঁচিয়ে উঠল আকাশের দিকে। সকলেই হাত নাড়ালেন মোদির দিকে। ‘আমিও চৌকিদার’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে লাফাতে শুরু করলেন অনেকে। যদি মোদি দেখেন।
মঞ্চে আসতেই মোদি বোঝাতে চাইলেন, আকাশ থেকেই জনে জনে সকলকে দেখেছেন। এসেই বললেন, ‘বিজেপির হয়ে ক্ষমা চাইছি। প্যান্ডেল ছোট হয়েছে। ভেতরের থেকে বাইরে দ্বিগুণ লোক। এই প্রবল রোদেও। শপথ নিচ্ছি, আপনাদের এই কষ্ট সুদসমেত উন্নয়ন করে ফেরত দেব।’
পাঁচ বছর আগেও ঠিক এমন কথাই লোকসভার প্রচারে বলতেন মোদি। মোদি রোদের কথা বলেছেন, সাদামাটা গ্রামবাসী এতেই খুশি। গত পাঁচ বছরে সুদসমেত ফেরত দেননি কেন, এমন প্রশ্ন তাদের মনে আসেনি। কিংবা এসেছে হয়তো।
আরও পড়ুন : তরুণীর পা ছড়িয়ে বসার পোস্টার ঘিরে তুমুল বিতর্ক পাকিস্তানে
Advertisement
গতকাল সহারনপুরের দায়িত্বে থাকা আরএসএসের এক সক্রিয় সদস্য বলছিলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে ৩০টির মতো আসন খোয়ানোর প্রবল আশঙ্কা। বিশেষ করে বুয়া-বাবুয়ার জোটের পর। জাতির সমীকরণ একমাত্র হিন্দুত্ব আর দেশভক্তির তাসেই মিটতে পারে।’
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ টুইট করেন, ‘মুসলিম লিগ একটি ভাইরাস। আর কংগ্রেস তাতে আক্রান্ত।’ যোগীর নিশানা রাহুল গান্ধীর কেরালায় কেন্দ্র হলেও উত্তরপ্রদেশেও তার প্রভাব ফেলতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যখন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে ভোটের আর ঠিক ছয়দিন বাকি।
এসআইএস/এমএস