দেশজুড়ে

নতুন কৌশলে চলছে কোচিং

চলতি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সেই নির্দেশ অমান্য করে ঝিনাইদহে চলছে কোচিং বাণিজ্য। তবে নতুন কৌশলে চলছে এ কোচিং বাণিজ্য। নাম দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত ক্লাস। অতিরিক্ত ক্লাসের আড়লে চলছে কোচিং।

Advertisement

সরকারি ছুটির দিনে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে চলে কোচিংয়ের ক্লাস। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে এ কোচিং বাণিজ্য।

গত বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে মেরাজ উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ছিল। কিন্তু ওই দিন সকালে শহরের জমিলা খাতুন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে। নিচতলা ও দোতলার দুটি কক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অন্য কোচিংয়ের একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। ছবি তুলতে গেলে তেড়ে আসেন এক শিক্ষক।

একই সময় শহরের চাকলাপাড়ার শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাচ্ছেন এক শিক্ষক। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে ক্লাস চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। কিসের ক্লাস চলছে জানতে চাইলে অতিরিক্ত ক্লাস বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা জানায়, অতিরিক্ত ক্লাসের নামে এখন আমাদের কোচিং করানো হয়।

Advertisement

একই দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে ক্লাস চলছে। সেখানে রয়েছে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে সেখানেও চলছে কোচিং।

ক্লাসের বাইরে অপেক্ষা করছে আরও কিছু ছাত্রী। ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক ছাত্রীর কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে তাদের কোচিং করান শিক্ষক।

এদিকে, শহরের আরাপপুর উকিলপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং করাচ্ছেন সরকারি বালক বিদ্যালয়ের আক্কাস নামের এক শিক্ষক। তিনিও অতিরিক্ত ক্লাসের নামে শিক্ষার্থীদের কোচিং করান।

স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের নির্ধারিত ক্লাসের সময় গল্প করে কাটিয়ে দেন। রুটিন অনুযায়ী ক্লাস নেন না শিক্ষকরা। সেই সঙ্গে পরীক্ষার সময় হাতের নাগালে চলে এলেও রুটিন শেষ হয় না। এ অবস্থায় কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ফলে ভালো-মন্দের বিচার না করে ঢালাওভাবে ক্লাসের সব শিক্ষার্থী কোচিং করতে বাধ্য হয়।

Advertisement

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ সংক্রান্ত কমিটি আছে। কমিটির মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে অভিযান চালানো হবে।

এএম/এমকেএইচ