বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশ সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে এবং এসডিজির লক্ষ্যগুলো সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থবহ সুবিধা প্রয়োজন। বিশ্ববাণিজ্য সুবিধা এ কাজ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য খুবই সহায়ক হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, ডব্লিউটিও পরামর্শকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের ট্রেড পলিসি গ্রহণ ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবসময়ই ডব্লিউটিও দোহা ঘোষণার বাস্তবায়ন চেয়ে আসছি। এখন আমরা অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধাসহ সকল সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
গতকাল (৫ এপ্রিল) জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) বাংলাদেশের ট্রেড পলিসি রিভিউ কমিটির সমাপনী বৈঠকে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি। ডব্লিউটিও ট্রেডপলিসি রিভিউ বডির চেয়াম্যান অ্যাম্বাসেডর টিহাংকির সভাপতিত্বে সভায় অ্যাম্বাসেডর ডি রোবার্তো উপস্থিত ছিলেন। আজ (শনিবার) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে সভায় টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ আক্রান্ত ও দরিদ্র দেশের রোল মডেল নয়, এখন একটি সম্ভাবনাময় দেশ। ইতোমধ্যে আমরা তা প্রমাণ করেছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল, বিশ্ব সভায় তা স্বীকৃত। আমরা ইতোমধ্যে এমডিজি সফলভাবে বাস্তবায়ন করে জাতিসংঘে পুরষ্কৃত হয়েছি, এসডিজি বাস্তবায়নে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
Advertisement
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশ বাণিজ্য ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে আমরা ইতোমধ্যে সুনাম অর্জন করেছি। আমরা ডব্লিউটিও এবং ক্রেতাগোষ্ঠীর আন্তরিক সহযোগিতা চাই। অনেক প্রতিবন্ধকতা দূর করে বাংলাদেশ এখন সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ইতোমধ্যে সড়ক, নৌ ও বিমান যোগাযোগ আধুনিকায়ন করেছে।
তিনি বলেন, আমদানি-রফতানি সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সমুদ্রবন্দরগুলো সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বন্দরের কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি নতুন সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা হয়েছে। সড়ক পথ সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহন সম্ভব। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের আগ্রহ এবং সদস্য দেশগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ বাংলাদেশকে আরও উৎসাহিত করেছে। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দ্রুত অগ্রগামী পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্যতম উল্লেখ করেছে এবং এ বছর জিডিপি ৮ ভাগেরও বেশি অর্জিত হবে বলে জনিয়েছে। বাংলাদেশ এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। ট্রেড পলিসি সময়োপযোগী করা হয়েছে। বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য সরকার বিনিয়োগ বান্ধব নীতি গ্রহণ করেছে। বিনিয়োগকারীদের চাহিদা মোতাবেক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। দেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, পণ্যের উৎপাদন খরচ কম- সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য আদর্শ স্থান। বিশ্বের অনেক দেশ ইতোমধ্যে এদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে, বিনিয়োগের পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সভায় বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, জেনেভায় বালাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম এম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মুনির চৌধুরীসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন।
Advertisement
এমইউএইচ/এমএমজেড/এমকেএইচ