পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠল না। দু পয়সা রোজগারের আশায় পড়ালেখা ছেড়ে ক্রিকেটকেই পেশা হিসেবে বেছে নিলেন। জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আবেশ খান এখন আইপিএলে পরিচিত এক নাম। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সংসারের হাল ধরেন এবার দিল্লি ক্যাপিটেলসের হয়ে খেলা এই পেসার।
Advertisement
জীবন বড় কঠিন। চাইলেই সেটা মনের মতো করে সাজানো যায় না। আবেশের বাবার একটা ছোট পানের দোকান ছিল ইন্দোরে। সেখান থেকে দিনপ্রতি খুব বেশি হলে ৫০০ টাকা আয় হতো। সেটা দিয়েই সংসার চলতো কোনোমতে। রাস্তা চওড়া করার জন্য সেই পানের দোকানটি ভেঙে দেয় প্রশাসন।
তারপর থেকেই জীবন সংগ্রাম শুরু আবেশের। ক্রিকেট থেকে টুকটাক আয় হতো। প্রথমে পুরনো একটি সাইকেল কিনেছিলেন, সেটা চেপেই ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অনুশীলন করতে যেতেন। কষ্ট হতো, কিন্তু হাল ছাড়েননি আবেশ। ক্রিকেট দিয়েই তাকে উঠতে হবে, মনে মনে এই পণ করে নিয়েছিলেন।
ইন্দোরে ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান অময় খুরেশিয়ার একাডেমি থেকে অনূর্ধ্ব ১৬ দলে সুযোগ পান আবেশ। ১৭ দিনের ক্যাম্প থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা পেয়ে ১৫ বছর বয়সেই সংসারে সাহায্য করা শুরু করেছিলেন তিনি। রাজ্য দল, অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের হয়েও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল তার। ২০১৮-১৯ মৌসুমে রঞ্জিতে ৭ ম্যাচে ৩৫ উইকেট নিয়ে নজরে আসেন।
Advertisement
ভারতীয় দলের নেট বোলার হয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নেটে বল করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আবেশকে। তারপরই বদলে যায় জীবন। নেট বোলার থেকে জায়গা করে নেন আইপিএলে।
২০১৮ সালে আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে সুযোগ পেয়ে ৭ ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন আবেশ। এবার নাম পাল্টে দিল্লি ক্যাপিটালস হওয়া দলটি তাকে কিনেছে ৭৫ লাখ রুপিতে।
এখন বেশ ভালোভাবেই সংসার চলছে। বাবা, মা আর দাদিকে নিয়ে থাকছেন বাড়িতে, খরচ চালাচ্ছেন আবেশ নিজেই। ২৩ বছর বয়সী এই পেসারের এখন গাড়ি কেনারও সামর্থ্য হয়েছে। বললেন, বাড়িতে বেশি থাকা হয় না বলে গাড়ি কেনেননি এখনও। তবে বাড়িতে স্কুটার রয়েছে। সেটি নিয়েই রাস্তায় বের হন।
এমএমআর/এমএস
Advertisement