অর্থনীতি

বিনিয়োগকারীদের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা হাওয়া

গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় ৫৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার উপরে হাওয়া হয়ে গেছে।

Advertisement

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, দরপতন দিয়ে শুরু হয় গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার। দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও দরপতন অব্যাহত থাকে। এরপর মঙ্গলবার সূচক কিছুটা বাড়লেও বুধবার বড় দরপতন হয়। শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সামন্য উত্থান হলেও পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শেয়ারবাজার।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১২৪টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ১৮৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির দাম।

অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের এ দরপতনের কারণে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ১১ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা।

Advertisement

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৫ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৬৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

অপর দুটি মূল্য সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ২০ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২২ শতাংশ।

আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১২ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ।

এদিকে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪০২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৬১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪১ কোটি ২ লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

Advertisement

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৫৬৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। গত সপ্তাহের তুলনায় আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস লেনদেন কম হওয়ায় মোট লেনদেন বাড়ার হার বেশি।

গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৯১ দশমিক ১২ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এ ছাড়া বাকি ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ১ দশমিক ৩০ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং ১ দশমিক ১৩ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিসটিবিউশন কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিটির ২০২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ১০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২১ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ৮০ কোটি ৬২ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ব্র্যাক ব্যাংক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, সিঙ্গার বাংলাদেশ এবং মুন্নু জুট স্টাফলার্স।

এমএএস/এনডিএস/এমএস