আন্তর্জাতিক

নাচতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিলেন স্বামী

স্বামী চেয়েছিলেন তার স্ত্রী বন্ধুদের সামনে নাচুক। স্বামীর অনৈতিক এ দাবিতে সায় দেননি স্ত্রী। এতে ওই স্ত্রীকে যে ফল ভোগ করতে হলো তা রীতিমতো অমানবিক। এ কারণে স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন তিনি। পাশাপাশি স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানে। নির্যাতনের স্বীকার নারী এ অভিযোগ করেছেন। লাহোরের ওই নারীর নাম আসমা আজিজ বলে জানা গেছে। সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি, যেখানে তার ন্যাড়া মাথা এবং চোট পাওয়া মুখমণ্ডলের চিত্র উঠে এসেছে।

এ ঘটনায় আসমা আজিজের স্বামী মিয়া ফয়সাল এবং তার একজন ভৃত্যকে পুলিশের জিম্মায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে অভিযুক্ত ফয়সাল স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পাকিস্তানে এ ধরনের ঘটনা রোধে 'কাঠামোগত পরিবর্তন' জরুরি বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

Advertisement

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারে এবার হেলিকপ্টার হামলা, ৫ মুসলিম নিহত

২৬ মার্চ পোস্ট করা ভিডিওতে আসমা আজিজ অভিযোগ করেন, দুইদিন আগে নির্যাতনের শিকার হন তিনি। স্বামীর আদেশ অনুযায়ী স্বামীর বন্ধুদের সামনে নাচতে অস্বীকৃতি জানালে বন্ধুদের সামনেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

লাহোরের অভিজাত ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি অঞ্চলের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

আজিজ বলেন, ‘তিনি (স্বামী) তার কাজের লোকদের সামনেই আমার কাপড় খুলে নেন। আমার মাথা ন্যাড়া করার সময় কাজের লোকরা আমাকে ধরে রেখেছিল। চুল কাটার পর সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়। আমার কাপড় রক্তাক্ত হয়ে ছিল। আমাকে একটি পাইপের সঙ্গে বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তিনি আমাকে নগ্ন করে ঝুলিয়ে রাখার হুমকি দিয়েছিলেন।’

Advertisement

আসমা আজিজের অভিযোগ, তিনি এ ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল করতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে গড়িমসি করে।

আরও পড়ুন>> ভোটের প্রচারণায় গিয়ে ফুটবল খেললেন মিমি

তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, আসমা আজিজ থানায় জানানোর পরপরই তার বাসার দিকে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়, কিন্তু তার বাসা তালাবন্ধ ছিল এবং ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির কর্তৃপক্ষ তাদের ঢুকতে বাধা দেয়।

ভুক্তভোগী ওই নারীর পোস্ট করা ভিডিওটি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আফ্রিদির চোখে পড়ার পর তিনি পুলিশকে অভিযোগ দাখিল করার নির্দেশ দেন এবং তারপর পুলিশ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। পরদিন অভিযুক্ত ফয়সাল এবং তার এক ভৃত্য রাশিদ আলিকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে করা একটি মেডিকেল রিপোর্টে আসমা আজিজের হাত, গাল এবং বাম চোখের কাছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন এবং ফোলা ভাব পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

সামাজিকভাবে রক্ষণশীল পাকিস্তানে নারী অধিকারের বিষয়টি বহুবছর ধরেই বিভিন্ন রকম কোন্দল এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের ২০১৬ সালের লিঙ্গ বৈষম্য সূচকে ১৮৮টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ছিল ১৪৭ তম।

নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের রেকর্ড অসন্তোষজনক।

While we are glad that strong and swift action has been taken against the torturers of Asma Aziz, we note with dismay the alarming rise in reported cases of violence against women. Systemic change to protect women is necessary. Action can’t only be taken on a case-by-case basis. pic.twitter.com/IQSOEpMUd9

— Amnesty International South Asia (@amnestysasia) March 28, 2019

এসআর/এসএ/পিআর