আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে আইডাই নামের ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় আঘাত হানে গত মাসে। এতে আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো বন্যা শুরু হয় মোজাম্বিকেও। বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যেতে থাকে।
Advertisement
ঠিক এমন পরিস্থিতিতে এমিলিয়া নামের এক গর্ভবতী নারী তার দুই বছর বয়সী ছেলে সন্তানকে নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে দিগ্বিদিক ছুটছিলেন। তখন তার চারপাশে শুধু পানি আর পানি। উপায় না দেখে ছেলেকে নিয়ে একটি আম গাছে আশ্রয় নেন তিনি।
কিন্তু গাছে ওঠার পরই এমিলিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন তিনি। এ সময় তাকে সাহায্য করার কেউ ছিল না। কয়েক ঘণ্টা পর একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন এমিলিয়া। এভাবে সন্তানদের নিয়ে আম গাছে দুই দিন কাটে তার।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফকে তিনি বলেন, গাছে ওঠা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। গাছে উঠেই প্রসব বেদনা শুরু হয়। সাহায্য করার মতো আশেপাশে কেউ ছিল না। কয়েক ঘন্টার মধ্যে ওই আম গাছের উপরেই আমার মেয়ে সন্তান সারাকে জন্ম দিই। ছোট্ট ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে পড়েছিলাম।
Advertisement
ঘটনার দুই দিন পর প্রতিবেশিরা তাদেরকে উদ্ধার করে। বর্তমানে এমিলিয়া তার সন্তানদের নিয়ে ডোম্বির একটি উন্নত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
ঘূর্ণিঝড় আইডাই ও বন্যায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। কলেরা, ম্যালেরিয়ার মতো পানিবাহিত রোগে সেখানকার মানুষের জীবন হুমকিতে পড়েছে।
এক লাখেরও বেশি মানুষ অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। কলেরা ও ম্যালেরিয়ার মতো পানিবাহিত রোগ যদি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এটা `দ্বিতীয় দুর্যোগ’ হবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে।
পানিবাহিত এসব রোগের প্রাদুর্ভাব যাতে না ঘটে সেজন্য গত বুধবার মোজাম্বিকের বাইরা শহরে কলেরা রোগের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
Advertisement
সূত্র : ফক্স নিউজ
এমএসএইচ/এমকেএইচ