ভাগ্নিকে অপহরণের অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন এক মামা। মামলার পর অপহৃত ভাগ্নি সাবরিনা আক্তারকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। সাবরিনা আক্তার ইতালি প্রবাসী ভূঁইয়া শামিমের মেয়ে।
Advertisement
রাজধানীর শনির আখড়া এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে অপহরণ মামলার আসামি করেন মামা তোবারক হোসেন।
এরই মধ্যে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে শনির আখড়া এলাকা থেকে সাবরিনা আক্তারকে (১৮) উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে হুমায়ুন মিয়াকে (২২) গ্রেফতার করা হয়েছে।
হুমায়ুন মিয়াকে গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। হুমায়ুন মিয়াকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ জানান সাবরিনা আক্তার। কারণ হিসেবে সাবরিনা আক্তার পুলিশকে জানান হুমায়ুন মিয়া তার প্রেমিক। এমনকি তারা বিয়েও করেছেন। কিন্তু প্রেমিকার কোনো কথা শুনতে রাজি হয়নি পুলিশ।
Advertisement
একপর্যায়ে বাবা ভূঁইয়া শামিমকে ফোন দিয়ে সাবরিনা আক্তার বলেন, ‘আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। আমি নিজেই বিদেশ থেকে প্রেমিকের কাছে পালিয়ে এসেছি। আমরা বিয়ে করেছি। পুলিশকে বলো, আমার স্বামীকে ছেড়ে দিতে।’
কিন্তু বাবা শামীম মেয়ের বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। এমনকি সাবরিনার স্বামী হুমায়ুন মিয়াকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধও করেননি বাবা শামীম। পরে তাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
প্রেমিক হুমায়ুন মিয়া রূপগঞ্জ উপজেলার রঘুরামপুর এলাকার খাজাল উদ্দিনের ছেলে ও প্রেমিকা সাবরিনা আক্তার পার্শ্ববর্তী আমদিয়া এলাকার ইতালি প্রবাসী ভূঁইয়া শামিমের মেয়ে।
প্রেমিক-প্রেমিকার বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, মূলত প্রেম-সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপহরণ মামলা করেছেন মেয়ের মামা। এ মামলায় প্রেমিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের আসামি করা হয়েছে। প্রবাসীর মেয়ে সাবরিনা আক্তারকে উদ্ধারের পর আসল ঘটনা জানতে পারি আমরা। মেয়ের মামা অপহরণ মামলা করলেও বিষয়টি আসলে প্রেম-সংক্রান্ত।
Advertisement
এসআই ফরিদ আহাম্মেদ আরও বলেন, সাবরিনা আক্তার তার মা-বাবার সঙ্গে ইতালিতে প্রবাসী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। ফেসবুকে হুমায়ুন মিয়ার সঙ্গে সাবরিনা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেমের টানে ২৭ মার্চ ইতালি থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন সাবরিনা। পরে হুমায়ুন মিয়াকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। বিয়ের পর থেকে রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা।
এদিকে সাবরিনার মামা তোবারক হোসেন বাদী হয়ে হুমায়ুন মিয়া, হুমায়ুনের বাবা খাজাল উদ্দিন, মা নাছিমা বেগম, কাউসার ও আসাদসহ কয়েকজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন।
এসআই ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, মামলার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে প্রেমিক হুমায়ুন মিয়া ও প্রেমিকা সাবরিনা আক্তারকে শনির আখড়া এলাকার ওই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়। তারা বিয়ে করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছেন। কিন্তু মেয়ে পক্ষ অপহরণ মামলা করায় তাদের দুজনকে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত।
মীর আব্দুল আলীম/এএম/পিআর