আইন-আদালত

সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় নিজামীর আপিল

একাত্তরের মানবতাবিরেধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আনা আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে মামলাটির আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে আজ (মঙ্গলবার)।তবে আদালতে আপিল শুনানির প্রস্তুতির জন্য গত ১৮ আগস্ট সময় চেয়েছেন জাময়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী। ওই দিন দুপুরে তার পক্ষে সময় আবেদন করেন অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন।আবেদনে সময় চাওয়ার কারণ হিসেবে প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মতিউর রহমান নিজামীর অপর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আমাদেরও প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের অবকাশের পর দুই সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবারের মামলার তালিকায় মতিউর রহমান নিজামী বনাম প্রধান প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আপিলের কার্যতালিকায় ১১ নম্বরে আছে।এর আগে নিজামীর করা আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার জন্য রাষ্ট্র এবং আসামী উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী আপিল শানানি শুরু হওয়ার কথা।২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর নিজামীর দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। তার আগে একই বছর ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ নিজামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।অপর আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ১২১ পৃষ্ঠায় মূল আপিল আবেদনের সঙ্গে ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করা হয়েছে। মূল আপিলে ১৬৮টি গ্রাউন্ড পেশ করে দণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে।তবে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো আপিল করেননি। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ট্রাইব্যুনাল নিজামীর সর্বোচ্চ সাজার যে রায় দিয়েছে, তাতে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। আসামির আপিলের শুনানিতে অংশ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে দেয়া দণ্ড যাতে বহাল থাকে তার আর্জি পেশ করবো।ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, নিজামীর বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বরসহ মোট আটটি সন্দেহাতীত প্রমাণিত। এর মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১, ৩,৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৫, ৯, ১০ থেকে ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় এসব অভিযোগে তাকে অব্যাহতি (খালাস) দেয়া হয়।অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ২৮ মে তার বিচার শুরু হয়। ২০১৩ সালে নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদসহ মোট ২৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। অপরদিকে তার পক্ষে চার জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।ধর্মীয় অনুভূতির আঘাতের এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায গ্রেফতার দেখানো হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে আছেন।এফএইচ/বিএ 

Advertisement