রাজপথে আন্দোলনের তাগিদ দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, সবকিছুর মীমাংসা হচ্ছে রাজপথ। এখানে যারা বসে আছেন এই কাজটি আগেও করেছেন। আর একটিবার করতে হবে।
Advertisement
বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র-ঐক্য’ এর উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।
দুদু বলেন, দেশ একটি মর্মান্তিক পরিবেশে উপনীত হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে খুনিকে, যার ফাঁসি হওয়ার কথা, সে যদি আওয়ামী লীগ করে- তাহলে বিনা দ্বিধায় বেরিয়ে বিদেশ চলে যায়।
তিনি বলেন, মহাচোর, যারা ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলেছে, শেয়ার মার্কেট লুট করে নিয়েছে সেই ব্যক্তিরা সম্মানিত আসনে বসে দেশে ও বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ যিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একেবারে মিথ্যা মামলা যে মামলার কোনো ভিত্তি নেই, সেই মামলায় নিম্ন আদালত দিয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে এবং হাইকোর্ট দিয়েছে ১০ বছর। এটা দেশ না জঙ্গল?
Advertisement
দুদু আরও বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে যে ভোট হওয়ার কথা সেই ভোট না হয়ে আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতি এশিয়া মহাদেশের কোথাও হয়নি। সেই তথাকথিত ভোটে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীরা বলে বর্তমানের মতো আইনি শাসন, গণতন্ত্র অন্যান্য সময়ের চেয়ে নাকি ভালো।
তিনি বলেন, এই দেশ মুক্তিযুদ্ধকে ত্যাগ করেছে, এই রাষ্ট্র ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করেছে। এই রাষ্ট্রকে বন্যরাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে আওয়াামী লীগ ও শেখ হাসিনা। দেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। এই রাষ্ট্রে গণতন্ত্র তো দূরে থাক মানুষের ন্যূনতম অধিকার নেই। এটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত পরিণত হয়েছে।
শ্রমিক, ছাত্র ও যুবকদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, নিজেকে নিজের সামনে দাঁড় করাতে হবে। নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে ভাবতে হবে। যেটা করার ছিল সেটা করতে পেরেছে কি না?
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছি, শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি, এখন পারছি না কেন? এই কথাটা নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করে দেখতে হবে। যদি না পারি তাহলে সরে দাঁড়াতে হবে। অন্যকে আসতে দিতে হবে। এটা হলো পরিষ্কার কথা। জায়গাও ছাড়ব না, করবও না এটা হতে পারে না।
Advertisement
দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখনও বেঁচে আছেন। যদি কোনো কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন সরকারকে যতই দোষারোপ করেন না কেন, আফসোসের সীমা থাকবে না।
বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে একটাই দাবি করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। আসুন এই জায়গাটায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।
বিএনপি প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আব্দুল আউয়াল খান, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ওমর ফারুক শাফিন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/বিএ