দেশজুড়ে

কাগতিয়া শরিফে মিরাজুন্নবী ও সালানা ওরস শুরু

কোরআন-সুন্নাহর আলোকে শরিয়তভিত্তিক সব কর্মসূচির প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরিফে ৬৬তম মিরাজুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিল ও সালানা ওরসে হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উপলক্ষে ঈছালে ছওয়াব মাহফিল শুরু হয়েছে।

Advertisement

কাগতিয়া শরিফে বুধবার ফজর নামাজের পর এ মাহফিল শুরু হয়। মহান মনীষীর ওরসে পাকে অংশ নেয়ার উদ্দেশে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বাস, মাইক্রো, কার, সিএনজি, মোটরসাইকেলযোগে তরিক্বতপন্থী ছাড়াও মুসলিম জনতা টুপি ও তসবিহ হাতে কেউবা হেঁটে দলে দলে আসতে দেখা যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি কিংবা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক হয়ে রাউজান-নোয়াপাড়া সড়কের সর্বত্রই চোখে পড়ে বর্ণিল সাজসজ্জা। এ সড়ক দিয়ে যারা নিয়মিত চলাচল করেন তারা কয়েকদিন ধরেই মনোরম সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন। শুধু এ সড়কগুলো নয় বৃহত্তর চট্টগ্রামের সর্বত্রই যেন বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ছাড়াও রাজধানীর বুকেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শোভা পাচ্ছে বিশাল সাইজের বিলবোর্ড, ব্যানার আর ফেস্টুন। বর্ণিল সাজসজ্জার দৃষ্টিনন্দন দেখাচ্ছে পুরো চট্টগ্রাম।

গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরী ও রাউজানসহ আশপাশের প্রায় উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, গাউছুল আজমের (রা.) পবিত্র সালানা ওরসে পাক উপলক্ষে বর্ণিল সাজসজ্জায় সজ্জিত করা হচ্ছে সড়কের আশপাশ। সড়ক-মহাসড়কে শোভা পাচ্ছে কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরিফের মনোগ্রাম ও গাউছুল আজমের (রা.) বাণী সংবলিত দৃষ্টিনন্দন তোরণ। বাহারি সাজসজ্জায় সন্ধ্যার পর তোরণগুলো যেন সুন্নিপ্রেমী জনতার হৃদয়ে সৃষ্টি করছে এক অন্যরকম আবহ। সড়কের দুই পাশে ব্যানার-ফেস্টুনের পাশাপাশি বর্ণিল আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের ওপর নির্মিত ব্রিজগুলোতে শোভা পাচ্ছে বাহারি সাজসজ্জা। রাউজানসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতেও শোভা পাচ্ছে একই চিত্র। শুধু বাংলাদেশে নয় গাউছুল আজমের (রা.) পবিত্র সালানা ওরসে পাক উপলক্ষে ইউরোপ-আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুনিরিয়া যুব তবলিগ কমিটির শাখাগুলোর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

Advertisement

দিনরাত ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ফজর নামাজের পর খতম শরিফ ও ঈছালে ছাওয়াব, মোরাকাবা, রওজা জিয়ারত, মিলাদ-কিয়াম মোনাজাত, খতমে কোরআন, খতমে বোখারি ও তাহলিল।

জোহর নামাজের পর পবিত্র মিরাজুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিল ও দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর জীবনী শীর্ষক আলোচনা। বাদ আছর তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কোরআনের মাধ্যমে নূরে কোরআন বিতরণ। বাদ মাগরিব- ফাতেহা শরিফ আদায় ও ঈছালে ছওয়াব, মোরাকাবা, সিনা-ব-সিনা তাওয়াজ্জুহের মাধ্যমে হুজুর পাকের (সা.) বাতেনি নূর বিতরণ। কাবলে নামাজে এশা জিকিরে গাউছুল আজম মোর্শেদি ও তাবাররুক বিতরণ।

বাদ এশা কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরিফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (সা.) হযরত আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর তাকরির, মিলাদ-কিয়াম, মোনাজাত ও দরুদে মোস্তফা আদায়।

আখিরুল লাইল নামাজে তাহাজ্জুদ, জিকরে জলি, দরুদ শরিফ ও মোনাজাত। ৪ এপ্রিল (২৭ রজব) বাদ ফজর খতম শরিফ আদায় ও ঈছালে ছাওয়াব, মোরাকাবা, রওজা জিয়ারত, মিলাদ-কিয়াম ও আখেরি মোনাজাত। এতে কাগতিয়া শরিফের পক্ষ থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, টাকা-পয়সাসহ নানা ধরনের নজর-নেয়াজ কোনো কিছু না আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সালানায়ে ওরসে সব মুসলিম মিল্লাতকে উপস্থিত হওয়ার জন্য মাহফিল বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

Advertisement

জেডএ/পিআর