কক্সবাজারের পর্যটন নিয়ে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে প্রথম ভেবেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সৈকতের বালিয়াড়ি রক্ষার পাশাপাশি সৌন্দর্য বিকাশে তার পরামর্শেই লাগানো হয়েছিল সারি সারি ঝাউবীথি।
Advertisement
কালের পরিক্রমায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। পর্যটনে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে দেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার। পর্যটন বিকাশে বর্তমান সরকার এখানে বাস্তবায়ন করছে অর্ধশতাধিক মেগা প্রকল্প। গড়ে তোলা হচ্ছে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন।
এসব আরও অর্থবহ করতে সমুদ্র দর্শনে আসা পর্যটকদের স্বাগত জানাতে কলাতলী মোড়ে স্থাপন করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে দুজন শিল্পীকে দিয়ে প্রস্তাবিত ভাস্কর্যের ত্রিমাত্রিক নকশাও সংগ্রহ করেছে জেলা প্রশাসন। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। খোঁজা হচ্ছে স্পন্সরও।
পর্যটন সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোনের সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে শহরের প্রবেশমুখ কলাতলীতে স্থাপন করা হয় ‘জ’ ভাস্কর্য। ঢাকা ব্যাংকের সৌজন্যে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এ ভাস্কর্যটি ‘ডলফিন ভাস্কর্য’ নামেই বেশি পরিচিতি পায়। এ কারণে কলাতলী মোড়টি সবার কাছে ‘ডলফিন মোড়’ হিসেবে চিহ্নিত। ভাস্কর্যটি বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিন এবং হাঙ্গরের প্রতিমূর্তি দিয়ে সাজানো। পর্যটন এলাকার প্রবেশমুখে ভয়ংকর এসব হাঙ্গরের ভাস্কর্য দেখে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটকের মনে কক্সবাজার সৈকত নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম হয়। অনেকে মনে করেন এখানের সৈকতে বোধহয় এসব প্রাণীর অস্থিত্ব রয়েছে। তাই অনেকে ভয়ে সৈকতে গোসল করতে নামতেও ভয় পান। এ নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক ওঠায় ভাস্কর্যটি সরিয়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
Advertisement
অপর একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন কলাতলীর মোড়ে হাঙ্গরের ভাস্কর্য নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস দেন। প্রশ্ন তুলে সেখানে তিনি লিখেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কোনো হাঙ্গরের অস্তিত্ব না থাকা সত্ত্বেও কেন হাঙ্গরের ভাস্কর্য?
মূলত এরপরই জেলা প্রশাসন এটি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। তারা তা সরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বসানোর উদ্যোগ নেয়।
কক্সবাজার সদর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম কায়সারুল হক জুয়েল বলেন, হাঙ্গরের ভাস্কর্য আমাদের সৈকতের জন্য বিরূপ প্রভাব আনছে। তাই পর্যটনের স্বার্থে এটি সরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের দাবি করা হয় বিভিন্ন সময়। এরপর তা আমলে নিয়ে সামনে এগুচ্ছে জেলা প্রশাসন। এটি বাস্তবায়নে সবার এক হয়ে কাজ করা উচিত।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রবেশ মুখের সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের স্থানটি সম্পর্কে বাড়তি একটি অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাই কলাতলী মোড়ে জাতির জনকের ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। অর্থ সংস্থানে স্পন্সর খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই তা পেয়ে যাব। এটি নিশ্চিত হলেই এ বছরই ভাস্কর্য নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
Advertisement
সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/এমএস