মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে মরক্কোর ক্যাথলিক কমিউনিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খ্রিষ্টানদের (রোমান ক্যাথলিক) প্রধান ধর্ম গুরু পোপ ফ্রান্সিস। ইসলামের একটি মধ্যপন্থী সংস্করণকে উৎসাহ দিতে মরক্কোকে সমর্থন করছেন তিনি।
Advertisement
মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মেদের সঙ্গে গত রোববার এক যৌথ ঘোষণায় জেরুজালেমকে খ্রিষ্টান, ইহুদি এবং মুসলমানদের ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের' প্রতীক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।
ওই যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় ‘জেরুজালেমের প্রতি সবার উত্তরাধিকার রয়েছে, বিশেষ করে একেশ্বরবাদী তিন ধর্মের অনুসারীদের।’
এতে আরও বলা হয়, ‘জেরুসালেমের সুনির্দিষ্ট বহুধর্মীয় চরিত্র, আধ্যাত্মিক মাত্রা এবং বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিচয়... অবশ্যই রক্ষা এবং উৎসাহিত করতে হবে।’
Advertisement
আন্তঃধর্মীয় সংলাপকে উৎসাহ দিতে তিন দিনের সফরে গত শনিবার মরক্কো পৌঁছান বিশ্বের ১৩০ কোটি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীর এই প্রধান আধ্যাত্মিক নেতা। বিগত তিন দশকেরও বেশি সময় পর (৩৪ বছর) কোনো পোপের এটি ছিল প্রথম মরক্কো সফর। তার আগে সর্বশেষ ১৯৮৫ সালে পোপ জন পল মরক্কো সফর করেন।
রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মেদ হচ্ছেন ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের' একটি কমিটির প্রধান। যে কমিটি জেরুজালেমের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং স্থাপত্যগত ঐতিহ্য রক্ষা এবং উৎসাহিত করার লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনিরা এতে মারাত্মক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ তারা পবিত্র এই নগরীকে (জেরুজালেম) তাদের ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে।
মরক্কো সফরের দ্বিতীয় দিনে পোপ দেশটির সংখ্যালঘু ক্যাথলিক কমিউনিটির প্রতি উগ্রবাদ দমনে মুসলমানদের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এভাবে আপনারা ভেদাভেদ এবং অজ্ঞতাকে পুঁজি করে ভয়, ঘৃণা এবং সংঘাত সৃষ্টির সব চেষ্টার মুখোশ খুলে দিতে এবং সেগুলো বানচালে সক্ষম হবেন।’
Advertisement
এর আগে শনিবার পোপ ফ্রান্সিস উগ্রবাদকে অস্বীকার করা ইসলামের একটি সংস্করণকে উৎসাহিত করতে মরক্কো যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটির প্রতি সমর্থন জানান। উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে ৯৯ শতাংশই সুন্নি-মুসলিম। দেশটির কাসাব্লাংকায় ২০০৩ সালে সন্ত্রাসী বোমা হামলার পর ধর্মীয় বিভিন্ন নীতিতে পরিবর্তন আনে। সেই হামলায় ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। সূত্র : এপি, রয়টার্স ও এএফপি
এমএমজেড/এমকেএইচ