নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ছয় সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের ঘটনায় চরজব্বার থানায় মামলা করা হয়েছে।
Advertisement
গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা করেন। এ মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে চরজুবলী ইউনিয়নের উত্তরবাগ্যা গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো- ওই গ্রামের নূর আলমের ছেলে ইউছুফ (৪২) ও আব্দুল খালেকের ছেলে আবুল বাসার (৩০)।
চরজব্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। দুপুরে উত্তরবাগ্যা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত আবুল বাসার ও ইউছুফকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
Advertisement
নির্যাতিতা নারী ও তার স্বামী অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাদের পছন্দের প্রার্থী তাজ উদ্দিন বাবরের চশমা প্রতীকে ভোট দেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহারের সমর্থকরা ভোটের দিন ওই নারী ও তার স্বামীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। এতে ভয়ে তারা উপজেলার পশ্চিম চরজব্বার ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে না গিয়ে বিকেলে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পরে বাড়িতে থাকা সন্তানদের কথা চিন্তা করে রাত ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে তালা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ইউসুফ মাঝি ও বেচু মাঝিসহ কয়েকজন তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। একপর্যায়ে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা ওই নারীর স্বামীকে মারধর করে তার মুখ বেঁধে ফেলে।
পরে বেচু মাঝি, বজলু ও আবুল বাসার ওই নারীকে গত সংসদ নির্বাচনে আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রুহুল আমিনের কলা বাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। পরে তার স্বামীর চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে এবং রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আজিম জানান, ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। গুরুতর আহত ওই নারী ও তার স্বামীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর ধর্ষণ-সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো আজ করা হবে।
Advertisement
এদিকে এ খবর পেয়ে সকালে হাসপাতালে এসে নির্যাতিতা ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খিশা।
তিনি জানান, তাদের মুখ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনেছেন। এখন তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান
মিজানুর রহমান/এএম/পিআর