উড়োজাহাজ লিজের নামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টদের কমিশন বাণিজ্য বন্ধে উদ্যোগ নিচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এজন্য নিজস্ব উড়োজাহাজ নির্ভর করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ প্রতিষ্ঠানকে।
Advertisement
বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক জানান, এ লক্ষ্যে চলতি বছর আরও ৮ থেকে ১০টি সুপরিসর নতুন উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দেয়া হবে। গতকাল রোববার সচিবালয়ের নিজ দফতরে জাগো নিউজকে এমন তথ্য জানান সচিব।
আরও পড়ুন >> ‘কথা দিচ্ছি, এয়ারপোর্টে প্রবাসীরা আর হেনস্থা হবেন না’
তিনি বলেন, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজ রয়েছে ১৩টি। দেশের আকাশ পথে প্রতিনিয়ত যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। বিগত দিনে অপরিকল্পিত কেনাকাটা ও লিজের কারণে বিমানে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে। উড়োজাহাজ সঙ্কট সমাধানে ক্রমাগত লিজে মনোযোগী ছিল এখানকার নানা মহল। বিমানের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা না করে শুধু ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে ঝুঁকিপূর্ণ উড়োজাহাজ লিজে আনতে বিমানকে বাধ্য করা হয়েছে। এর একটি উদাহরণ ইজিপ্ট এয়ার থেকে আনা দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ। এসব উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ও মূল্যবান স্পেয়ার পার্টস পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যায় না। জেনেশুনে কীভাবে সেগুলো আনতে চুক্তি করা হলো- এর কোনো সদুত্তর কেউ দিতে পারেননি।
Advertisement
মহিবুল হক বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ও স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটবে বিমানে। ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় আমরা নতুন উড়োজাহাজের অর্ডার প্রক্রিয়া নিয়মিত করব। যাতে চলমান সঙ্কটগুলো ভবিষ্যতে আর না থাকে। এখন থেকে প্রতি পাঁচ বা দশ বছর পরপর নতুন উড়োজাহাজের অর্ডার নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন >> এক বছরে বিমানের লোকসান ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা
জানা গেছে, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা ১৩টি উড়োজাহাজের মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিম লাইনার দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে সক্ষম। এছাড়া আছে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ। এগুলো মূলত আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার উপযোগী।
অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য রয়েছে তিনটি ড্যাস ৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ। এর মধ্যে দুটি প্রায়ই টেকনিক্যাল কারণে গ্রাউন্ডেড থাকে। ফলে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট বিপর্যয় চরমে পৌঁছে।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিমানের আন্তর্জাতিক রুট মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সীমাবদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যে কুয়েত, দাম্মাম, দোহা, রিয়াদ, জেদ্দা, আবুধাবি, দুবাই ও মাস্কাটে ফ্লাইট রয়েছে বিমানের। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট চালাচ্ছে বিমান। এছাড়া স্বল্প দূরত্বে কলকাতা, ইয়াঙ্গুন ও কাঠমান্ডুতে ফ্লাইট রয়েছে বিমানের। ইউরোপে কেবল লন্ডন রুটেই ফ্লাইট পরিচালনা করছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।
আরও পড়ুন >> সুদ দিচ্ছে পদ্মা অয়েল, লাভ খাচ্ছে বিমান!
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকা এবং উড়োজাহাজ সঙ্কটের কারণে একদিকে চলমান রুটের বেশির ভাগ ফ্লাইট যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারছে না, অন্যদিকে সম্ভাবনাময় অনেক রুটও চালু করা যাচ্ছে না। অথচ বিমানের আঙ্গিনায় সফল ও সার্থকভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো।
আরএম/এমএমজেড/এমএআর/পিআর