দৈনন্দিন ও অন্যান্য সেবামূলক কার্যক্রম নিশ্চিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত (নতুন যোগ হওয়া) ওয়ার্ডগুলোতে এখনও তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তবে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর জনসাধারণ যাতে উন্নত নাগরিক সেবা পান সেটা নিশ্চিতে কাজ করছে দুই সিটি কর্পোরেশন।
Advertisement
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) যুক্ত হওয়া আট ইউনিয়ন (মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ধনিয়া, শ্যামপুর, নাসিরাবাদ, দক্ষিণগাঁও, ডেমরা ও মান্ডা) মিলে গঠিত হয়েছে ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমান। এর মধ্যে বর্ধিত ওয়ার্ডের ১৯০ কিলোমিটার সড়কে ছয় হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি বসানো হয়েছে। এপ্রিলে এসব বাতি জ্বলবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া ডিএসসিসির বর্ধিত এলাকার জন্য প্রায় ১০ হাজার এলইডি বাতি প্রয়োজন। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাকি এলাকায় এসব বাতি লাগানো হবে। বাতি লাগানো হলে ডিএসসিসির অন্য এলাকার মতো নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোও আলো ঝলমলে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: চুরি যাচ্ছে ডিএসসিসির পুরনো সড়কবাতি
Advertisement
এ বিষয়ে সম্প্রতি ডিএসসিসির নবনির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ডিএসসিসির নতুন ওয়ার্ডগুলোতে এপ্রিলের মধ্যে এলইডি বাতি জ্বলবে। তবে দুই মাসের মধ্যে সব ওয়ার্ডে এলইডি বাতি জ্বালানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে।
অন্যদিকে ডিএসসিসির অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান। নতুন যুক্ত হওয়া আট ইউনিয়নের মধ্যে মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ধনিয়া ও শ্যামপুরে ৭৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা, নর্দমা, ফুটপাত, এলইডি বাতি স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ৪৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নাসিরাবাদ, দক্ষিণগাঁও, ডেমরা ও মান্ডায় অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এসব এলাকার উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে ৬৫.৭২ কিলোমিটার রাস্তা ও ৭.৯৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ, ১৭টি আরসিসি ব্রিজ, ৮৪ কিলোমিটার নর্দমা, ১১৬.১৮ কিলোমিটার রাস্তায় এলইডি বাতি স্থাপনসহ ইউটিলিটি লাইন প্রতিস্থাপন।
আরও পড়ুন : ‘ব্যর্থ’ সৌর প্রকল্পে ফিরছে না এলইডি
Advertisement
পাশাপাশি ডিএসসিসির আওতাভুক্ত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করছে সংস্থাটি। সে লক্ষ্যে ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে তারা।
তিন বছর মেয়াদের এ প্রকল্পের কাজ ডিএসসিসির সব ওয়ার্ডে হবে। প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক নির্মাণ, নর্দমা, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ নির্মাণ ও সংস্কার, ফুটপাত নির্মাণ ও প্রশস্ত করা হবে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ডিএসসিসির বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারবেন। ড্রেনগুলো প্রশস্ত হলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও নিরসন হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৯ মে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আটটি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ডকে ১০টি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন : সড়কবাতির ঝলকে আলোকিত ডিএনসিসি
এরপর ডিএসসিসির শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।
অপরদিকে ডিএনসিসির অন্তর্ভুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এ ওয়ার্ডগুলোতে একজন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
এএস/এএইচ/এমএআর/পিআর