দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দ্বীপ দেশ ব্রুনাই। দেশটি তিন দিক থেকে মালয়েশিয়া ও এক দিকে চীন সাগর বেষ্টিত। ১৯৮৪ সালে ব্রিটেন উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়া দেশটিতে সম্প্রতি ইসলামি শরিয়া আইন চালু হচ্ছে।
Advertisement
ইসলামি আইনের প্রধান উৎস কুরআনের বিধান প্রয়োগে দেশ পরিচালনায় এগিয়ে চলছে দ্বীপরাষ্ট্র ব্রুনাই। দোকানে মদবিক্রি ও মদপান থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন অপরাধে ইসলামি আইন বাস্তবায়নে দেশটি শক্ত ভূমিকা রাখছে।
আগামী ৩ এপ্রিল থেকে নতুন একটি আইন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তারা। সমকামিতা, পরকীয়া ও ব্যাভিচারের অপরাধে উন্মুক্ত মঞ্চে পাথর ছুড়ে মৃত্যু নিশ্চিত করবে।
ব্রিটেন উপনিবেশকালেও ব্রুনাইয়ে সমকামিতা ছিল নিষিদ্ধ। এটাকে দেশ ও সমাজের জন্য জঘন্য অপরাধ সাব্যস্ত করে এ অপরাধের শাস্তি প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করতে যাচ্ছে দ্বীপদেশ ব্রুনাই।
Advertisement
ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় কুরআনি আইন চালু হওয়া থেকে নিজ দেশে কুরআনি আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন দেশটির বাদশাহ হাসান আল-বালকিয়াহ। এর মাধ্যমে মুসলিম ধর্মবিশ্বাসে নিজেদের হাজার বছরের ইচ্ছা ও ঐতিহ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে তারা।
তবে সমকামিতা, পরকীয়া ও ধর্ষণের অপরাধে কঠোর শরিয়া আইন ‘পাথর ছুড়ে হত্যা’ শাস্তির বিধান চালু করায় সমালোচনাও রয়েছে দেশটিতে।
কুরআনের এ বিধান চালু করায় দেশটিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তারা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ব্রুনাই’র কাছে এ আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
মানুষকে সমকামিতা, পরকীয়া ও ধর্ষণের মতো মারাত্মক সামাজিক অপরাধগুলো থেকে ফেরাতে শুধু বিধান বাস্তবায়ন করাই শেষ নয় বরং এ শাস্তি কার্যকর করা হবে সাধারণ মানুষের সামনে উন্মুক্ত মঞ্চে।
Advertisement
‘পাথর ছুড়ে হত্যা’র আইন বাস্তবায়ন মানুষকে দেখানো হবে যাতে এ ধরনের অপরাধে অন্যরা নিজেদের নিয়োজিত না করে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্রে বিশ্বাসী দেশটি পবিত্র কুরআনের আলোকে দেশ শাসনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী থাকলেও সুলতান হাসান আল-বালকিয়াহ-এর একচেটিয়া প্রভাব ও নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় দেশটি।
১৯৮৪ সালে ব্রিটেন উপনিবেশ থেকে আলাদা হলেও এখনো ব্রিটেনের সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সুসম্পর্ক। আর ব্রিটিশ শাসনামলেও দেশটিতে সমকামিতা নিষিদ্ধ ছিল। তখন এ অপরাধে কারাবাসের বিধান থাকলেও নতুন করে ইসলামি বিধান মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ব্রুনাই ২০১৪ সালে ইসলামি শরিয়া আইনে দেশ পরিচালনার ঘোষণা দেয়। আর এ সিদ্ধান্ত সুলতানের নির্দেশই গ্রহণ করা হয়।
সাম্প্রতিক আইন অর্থাৎ সমকামিতা ও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তথা পরকীয়ার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড আইন পাশ করায় দেশটির অধিকাংশ মুসলমান স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, এতে দেশে অপরাধের সংখ্যা আরও কমবে এবং সমাজে শান্তি বিরাজ করবে।
এমএমএস/এমকেএইচ