সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজার ও বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর আতঙ্ক কাজ করছে সবার মাঝেই। এ থেকে ব্যতিক্রম নয় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ভবনে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থার নাজেহাল দশা। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে কোন দফতরের অধীনে এটি নিয়ন্ত্রিত হয় সেটাই কেউ সঠিক করে বলতে পারেনি।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবনসহ আবাসিক হলগুলোতে নেই আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এসব জায়গায় স্থাপন করা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলোর বেশিরভাগই হয় মেয়াদোত্তীর্ণ নয়তো অকেজো। কোনো কোনো যন্ত্রে নেই মেয়াদের স্টিকার কিংবা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। আবাসিক হলগুলোতে আগুন নিয়ন্ত্রণের মূল্যবান যন্ত্র চুরি হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এসব ভবনগুলোর কোনোটিতেই নেই একাধিক ফটক কিংবা জরুরি বহির্গমনের উপায়। হাতেগোনা কয়েকটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র সক্রিয় থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই জানা নেই এর ব্যবহারবিধি। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ফায়ার সার্ভিসের আগুন প্রতিরোধবিষয়ক একটি মহড়া অনুষ্ঠিত হলেও এরপর এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ফাহাদ জানান, উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত সব ব্যাপারে সচেতন থাকা। আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা যে হারে বেড়ে চলেছে সেই অনুপাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। ক্যাম্পাসের আশপাশে নেই কোনো পুকুর কিংবা জলাশয়। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে নামমাত্র, তবুও এ বিষয়ে সচেতন নয় শিক্ষার্থীরা। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা দুরহ হয়ে উঠবে।’
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘শিগগির এ নিয়ে কাজ করা হবে’ এমন দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ দফতরই একে অন্যের উপর দায় চাপিয়েছেন।
প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) এস এম শহিদুল হাসান বলেন, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অকেজো, এটা আমিও দেখেছি। তবে এর সংশ্লিষ্ট দফতর আমার নয়। এটি কোন দফতরের অধীনে সেটাও আমি জানি না।’
তিনি বলেন, এগুলো মেরামত করা জরুরি। এটি নিরাপত্তা শাখা, নাকি এস্টেট শাখা অথবা পরিকল্পনা দফতর দেখভাল করে তা একটু খোঁজ নিতে হবে। তবে নতুন যে ভবনগুলো হচ্ছে সেগুলোতে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকছে।
অন্যদিকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র মেরামত তার দফতরের দায়িত্ব নয় বলে অন্য দফতরের উপর দায় চাপিয়ে দেন।
Advertisement
রিদওয়ান ইসলাম/এফএ/এমকেএইচ