জাতীয়

ঝড়-বজ্রপাতে ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় নিহত ৭

হঠাৎ ঝড় ও বজ্রপাতে রাজধানী ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় সাতজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন, মৌলভীবাজারে দুজন, নেত্রকোনায় একজন, কিশোরগঞ্জে একজন ও সুনামগঞ্জে একজন মারা গেছেন।

Advertisement

এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ফসলহানির পাশাপাশি ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় ঝড়ের সঙ্গে শিলাসহ মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়।

রাজধানীতে ক্ষণিকের এই ঝড়েই ইট পড়ে ও গাছ ভেঙে মারা গেছে দুজন। সন্ধ্যায় শুরু হওয়া কয়েক মিনিটের ঝড়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় উপড়ে পড়েছে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটিও।

ডিএমপি’র শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম জাগো নিউজকে জানান, সংসদ ভবনের পেছনে চন্দ্রিমা উদ্যানের সড়কে গাছ ভেঙে পড়ে এক নারী মারা গেছেন। নিহত ওই নারীর নাম মিলি ডি কস্তা (৬০)। মনিপুরী পাড়ায় থাকতেন তিনি। সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হওয়াটাই যেন কাল হলো তার।

Advertisement

ওসি জানান, খবর পাওয়ার পর আদাবর থানা পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে আহত অবস্থায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ এখন হাসপাতাল মর্গে।

অন্যদিকে ঝড়ের সময় রাজধানীর পল্টনে একটি ভবন থেকে বেশ কয়েকটি ইট পড়ে চা দোকানদার হানিফ মিয়া (৩৫) গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত হানিফ মিয়া বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আব্দুল লতিফ সরকারের ছেলে। বর্তমানে ঢাকার মুগদা এলাকায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকতেন তিনি। নিহতের খালাতো ভাই রুবেল সাংবাদিকদের জানান, পল্টন মল্লিক কমপ্লেক্সের নিচে ফুটপাতে চায়ের দোকান করতেন হানিফ।

অন্যদিকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উত্তর পতনউষার গ্রামে বজ্রপাতে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো- গ্রামের দিনমজুর জুনেদ মিয়ার ছয় বছরের শিশুকন্যা সাদিয়া আক্তার ও চার বছরের মুন্নী আক্তার।

Advertisement

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক গণমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

গ্রামবাসীর বরাত দিয়ে তিনি জানান, সকালে সাদিয়া, মুন্নীসহ তিন শিশু বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। এ সময় বজ্রপাতে দুই শিশু গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে দ্রুত মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সরকারের পক্ষ থেকে নিহত দুই শিশুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে রোববার সকালে বজ্রপাতে আসর আলী (৬৯) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল জানান, বাহাদুরপুর গ্রামের আসর আলী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৃষ্টিপাত শুরু হলে বাড়ির উঠানে গৃহস্থালীর কাজ করার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে নিহত হন।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় বজ্রপাতে রাব্বি মিয়া (১৮) নামের একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে রোকন মিয়া (২১) নামের আরও একজন। নিহত রাব্বি মিয়া উপজেলার নয়ানন্দী হাটি গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় রোববার দুপুর ১টার দিকে বজ্রপাতে দেলোয়ার হোসেন (১৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দেলোয়ার উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জুহুর মিয়ার ছেলে।

জামালগঞ্জ থানার ওসি আবুল হাসেম জানান, দেলোয়ার হোসেন বাড়ির পাশের হাওরে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। দুপুর ১টার সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এমবিআর/