আন্তর্জাতিক

খাশোগির খুনিদের প্রশিক্ষণ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার আগে সৌদি আরবের হিট টিমের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। গত বছরের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে একদল ঘাতকের হাতে খুন হন সৌদি রাজ-পরিবারের কট্টর সমালোচক ও মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের এই কলামিস্ট।

Advertisement

ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ডেভিড ইগনেসিয়াস যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের এক ডজনের বেশি সূত্রের সঙ্গে কথা বলে নতুন একটি কলাম লিখেছেন। এতে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত সৌদি ঘাতক দলের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ডেভিড।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের(এমবিএস) সমালোচক জামাল খাশোগি এক সময় রাজপরিবারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে বিয়ের প্রয়োজনীয় নথি আনতে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশ করেন তিনি। সৌদি আরবের পাঠানো একটি ঘাতক দলের সদস্যরা তাকে কনস্যুলেটের ভেতরে খুন করে; এই হত্যাকাণ্ডকে পূর্বপরিকল্পিত হিসেবে দাবি করছেন অনেকে।

আরও পড়ুন : খাশোগির লাশ টুকরো করার ছবি ফাঁস

Advertisement

তার মরদেহের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। ওয়াশিংটন পোস্টের ডেভিড ইগনেসিয়াসের সঙ্গে এক ডজনের বেশি সৌদি এবং মার্কিন সূত্রের কথা হয়েছে; যারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। ডেভিড ইগনেসিয়াস বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসভিত্তিক কোম্পানি টায়ার ওয়ান গ্রুপের কাছে স্পেশাল অপারেশনের প্রশিক্ষণ নেয় খাশোগির খুনিরা।

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, দ্বিপাক্ষিক সামরিক চুক্তি অনুযায়ী, সৌদির গোয়েন্দা এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর গুপ্তচরদের প্রশিক্ষণ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। খাশোগির খুনিরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নেয় সেই চুক্তির আওতায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তত্ত্বাবধানে এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। তবে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত সৌদির সামরিক কর্মকর্তাদের কোনো প্রশিক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রে হয়নি।

মার্কিন এই দৈনিক বলছে, সৌদি গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প স্থগিত রয়েছে। এ প্রকল্পের অনুমোদন এখনো দেয়নি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।

আরও পড়ুন : ভারতীয় বিমান বাহিনীর মিগ-২৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

Advertisement

কালপিপার ন্যাশনাল সিকিউরিটি সলিউশনস নামের একটি সংস্থা মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনী সিআইএর সাবেক কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় এই গোয়েন্দা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান আহমেদ আল-আসিরি এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। খাশোগি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন সৌদির প্রভাবশালী এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশটিতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, নিউইয়র্কের বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থা সারবারুস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের মালিকানাধীন দুটি গ্রুপ হলো টায়ার ওয়ান গ্রুপ এবং ডাইনকর্প।

তবে খাশোগি হত্যার সঙ্গে জড়িত সৌদির যে ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, টায়ার ওয়ান গ্রুপ সেই কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল কি-না সেব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

আরও পড়ুন : আমিরাতে পারফিউম কারখানায় আগুনে প্রবাসী নিহত

বর্তমানে এই কোম্পানিগুলোর বেশ কিছু অংশীদারিত্ব চুক্তি স্থগিত রাখা হয়েছে। সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ আপাতত থমকে আছে। রিয়াদের জবাবও ঝুলে আছে।

সাংবাদিক ডেভিড ইগনেসিয়াস বলেছেন, মূল কথা হচ্ছে- যদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তার নামে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার দায় না নেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভগ্ন অবস্থায় থাকবে।

এসআইএস/পিআর