বাংলাদেশে ৮ প্রজাতির কাঠবিড়ালি আছে। তারমধ্যে সবচেয়ে বড় ‘মালয়ান’ কাঠবিড়ালি। কারণ এ কাঠবিড়ালিকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠবিড়ালি। এটি দেখা যাবে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বনে গেলে। তৃণভোজী এ কাঠবিড়ালির খাদ্য তালিকায় রয়েছে বুনো ফল, বীজ ও কচি পাতা।
Advertisement
মালয়ান কাঠবিড়ালি দেখতে সাধারণ কাঠবিড়ালির মত নয়। আকৃতিতে অন্য কাঠবিড়ালির তুলনায় বেশ বড়। বিশাল লেজ আর বড় বড় কান দেখলে মনে হতে পারে বানর জাতীয় কিছু। এর ইংরেজি নাম Black giant squirrel বা Malayan giant squirrel, বৈজ্ঞানিক নাম Ratufa bicolor। মালয়ান কাঠবিড়ালির দেহের দৈর্ঘ্য মাথাসহ প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার। লেজ ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
> আরও পড়ুন- যে গ্রামে ঘুম ভাঙে পাখির ডাকে
বাংলাদেশে শুধু হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এর দেখা মেলে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য বনেও থাকতে পারে। তবে সংখ্যায় এত কম যে, খুব সহজে দেখা যায় না। আইইউসিএন এ কাঠবিড়ালিকে সংকটাপন্ন প্রজাতি হিসেবে শনাক্ত করেছে। ক্রমাগত বন ধ্বংস, প্রাকৃতিক প্রতিবেশ নষ্ট, পুরনো এবং দীর্ঘদেহী গাছ উজাড়, বসতি স্থাপন, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শিকার বা হত্যা করার কারণে এ কাঠবিড়ালির অস্তিত্ব এখন সংকটের মুখে।
Advertisement
একটি পূর্ণবয়স্ক কাঠবিড়ালি দেড় মিটারের মত লম্বা এবং প্রায় দুই কেজি ওজন হতে পারে। এদের মাথা, কান, লেজসহ পৃষ্ঠদেশ কালো বা মেরুন বর্ণের এবং পেটের দিকটা সাদা হয়। গাছের মগডালে ডালপালা ও পাতা দিয়ে বাসা তৈরি করে। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম। বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, নেপাল, ভারত, মায়ানমার, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার গহীন বনে এর দেখা মেলে।
> আরও পড়ুন- ঘড়িয়াল বিলুপ্তির গবেষণা সঠিক নয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরেফিন খান বলেন, ‘এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠবিড়ালি। বাংলাদেশে কেবল রেমা-কালেঙ্গাতেই পাওয়া যায়। তাই এখনই বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী না হলে কাঠবিড়ালিটি হারিয়ে যাবে আমাদের দেশ থেকে।’
জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে মৌলভীবাজারের আদমপুর বনবিটে একটি মালয়ান কাঠবিড়ালি নিজের চোখে দেখেছি। অন্য বনে এদের অবস্থান থাকলেও সাধারণত দেখা যায় না। তবে দেশে একমাত্র রেমা-কালেঙ্গা বনে এদের সহজে দেখা মেলে।’
Advertisement
এসইউ/এমএস