আইন-আদালত

গ্রীন লাইনে পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে

রাজধানীতে গ্রীন লাইন বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এখন পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষের করা আবেদন শুনানি শেষে রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ তা খারিজ করে আদেশ দেন। এর ফলে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল থাকলো আপিল বিভাগে।

আদালতে গ্রীন লাইনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও মো. ওজিউল্লাহ। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড খবির উদ্দিন ভূঁইয়া।

এদিন ৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ১৪ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত সেদিন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি ৩১ মার্চ (আজ) আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে আবেদনটির ওপর শুনানি হয়।

Advertisement

বেপরোয়া বাসের চাপায় পা হারানো রাসেলকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দিতে গত ১২ মার্চ গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং তার কাটা পড়া পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও তাদের বহন করতে বলা হয়।

হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। এ জন্য দুই সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দেন আদালত।

৩১ মার্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। তাদের আপিলটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের ওই অর্থ পাচ্ছেন রাসেল সরকার।

উল্লেখ্য, গত বছর ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রীন লাইন পরিবহনের বাস চালক প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) উপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে দেন। এতে রাসেলের দেহ থেকে বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর অস্ত্রোপচার করে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়।

Advertisement

পা হারানো রাসেলের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম, গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে। ঢাকার আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় তার বাসা। ওই দুর্ঘটনার পর সরকারি দলের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি আইনজীবী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি গত ১৪ মে হাইকোর্টে ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন।

রিটের শুনানিতে ৬ মার্চ রাসেল আদালতকে বলেছিলেন, পা হারানোর পর এখন পর্যন্ত গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষ তাকে একটি টাকাও দেয়নি। খোঁজখবর নেয়নি, চিকিৎসার ব্যয়ও বহন করেনি।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে রাসেলকে কেন এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এ ঘটনায় রাসেলের বড় ভাই আরিফ সরকার বাসচালক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল মামলা করেন।

এফএইচ/এসএইচএস/এমএস