পাক-ভারত উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ভেবে নিজেদের হেলিকপ্টারে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ভূপাতিত করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিজেদের হেলিকপ্টার উড়িয়ে দেয়ার এ ঘটনায় প্রাণ যায় এক বেসামরিক-সহ ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৬ কর্মকর্তার। গত মাসে পাক-ভারত উত্তেজনার এক মাস পর ভারতীয় দৈনিক ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে।
Advertisement
ওই ঘটনার এক মাস পর ভারত দাবি করেছে, আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল ২৫টি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান। এ সময় প্রতিরক্ষামূলক একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাক যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। কিন্তু টার্গেট মিস করে এই ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে আঘাত হানে ভারতীয় হেলিকপ্টারে।
ইকোনমিক টাইমস বলছে, রুটিন মিশনের সময় এমআই-১৭ ভি৫ একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী। এতে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দুর্ঘটনাবশত নিজেদের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করেছে।
আরও পড়ুন : জুকারবার্গের পোস্ট ডিলিট করেছে ফেসবুক
Advertisement
বিধ্বস্তের এ ঘটনায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর অন্তত ৬ কর্মকর্তার প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে দেশটির একজন বেসামরিক নাগিরকও নিহত হন।
ইকোনমিক টাইমস বলছে, হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্তের চূড়ান্ত মুহূর্তে আইএফএফ (আইডেন্টিটি, ফ্রেন্ড অথবা ফো) সিস্টেমের সুইচ অন আছে কি-না তা অত্যন্ত সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে খুব কম উচ্চতায় উড়তে থাকা মনুষ্যবিহীন অ্যাটাক ভেহিক্যাল টার্গেট করা হলেও তা ভুলে লক্ষচ্যুত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় তারা আকাশে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
১৭ মিলিয়ন ডলারের শক্তিশালী এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটিতে কোনো ধরনের গুরুতর যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। কপ্টারটির সরঞ্জামাদিও মোটামুটি নতুন। ২০১২ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বহরে রাশিয়ার তৈরি এ হেলিকপ্টার যুক্ত হয়।
আরও পড়ুন : ভারতের প্রায় ৮৫ শতাংশ সাংসদ কোটিপতি
Advertisement
হেলিকপ্টারের পাশাপাশি ইসরায়েলের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রে যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি ছিল কি-না সেবিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত করছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তবে ভারতের বিমানবাহিনীর উচু স্তরের একটি সূত্র বলছে, এ দুর্ঘটনার জন্য কোনো কর্মকর্তা দায়ী কি-না সেটিও তদন্তাধীন রয়েছে। দুর্ঘটনার পেছনে কোনো কর্মকর্তা যদি দায়ী হন, তাহলে মার্শাল কোর্টে তার বিচার হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ঢুকে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর অভিযানের একদিন পর ওই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতের কেন্দ্রীয় আধা সামরিক পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪৪ জওয়ানের প্রাণহানির পর পাকিস্তানের বালাকোটে অভিযান চালায় ভারত। তবে পাকিস্তান বলছে, বালাকোটের যে স্থানে ভারত অভিযান চালানোর দাবি করেছে সেখানে জয়েশের কোনো ঘাঁটি নেই। এমনকি ওই স্থান পরিদর্শনে ভারতীয় কর্মকর্তাদের আহ্বানও জানিয়েছে পাকিস্তান।
সূত্র : আরটি।
এসআইএস/আরআইপি