ক্যাম্পাস

ববি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ডাকসু ভিপির একাত্মতা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।

Advertisement

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ফেসবুক পেজে তারা বিবৃতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর তার ফেসবুক আইডিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি করা চাটুকার, দালালদের দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে না। শিক্ষার্থীদের দাবিকে পূর্ণ সমর্থন করছি।

এর আগে গতকাল দুপুরে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর তার ফেসবুক লেখেন, বরিশাল ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়গণ যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া আদায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে কু-রুচিপূর্ণ, হীন ও বিদ্বেষমূলক (রাজাকারের বাচ্চা) বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে শুধু ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয় পুরো দেশের ছাত্র সমাজকে ক্ষুদ্ধ ও অপমানিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মতো সম্মানিত ও দায়িত্বশীল পদে থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন কু-রুচিপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য শিক্ষাঙ্গনের দুরবস্থাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। যে শিক্ষকগণের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা নীতি-নৈতিকতা শিখবে তাদের আচরণ এমন হলে শিক্ষার্থীদেরকে তারা কি শেখাবেন?

Advertisement

তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক বিবেচনায় লেজুরবৃত্তি রাজনীতি করা শিক্ষক কিংবা প্রশাসক নয়, জ্ঞান-গরিমায় পান্ডিত্যপূর্ণ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবান্ধব যোগ্য প্রশাসন চাই।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে আমরা সাংগঠনিকভাবে একাত্মতা পোষণ করছি। তাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আল আমীন জানান, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বৈকালিন চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের বাইরে প্রতিবাদ জানান। এ ঘটনায় ভিসি ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেন। এর প্রতিবাদে এবং ভিসির ওই উক্তি প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

তিনি আরও জানান, ওই উক্তি প্রত্যাহার না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে ভিসি একক ক্ষমতাবলে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ ।

Advertisement

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এখন আর ৫ দফা বা ১০ দফা নয়। এখন একটিই দাবি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শুক্রবার বিকেলে চুতুর্থদিনের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে ভিসি প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় সেখানে তারা ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

সাইফ আমীন/আরএআর/এমকেএইচ